মন্ত্রীসভার অনুমোদনের অপেক্ষায় কৃষি বিপনন আইন-২০১৮
মতিনুজ্জামান মিটু : মন্ত্রীসভার অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে কৃষি বিপনন আইন-২০১৮। কৃষি বিপনন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক (গবেষণা ও বাজার তথ্য) দেওয়ান আসরাফুল হোসেন ও ফ্রেশকাট শাক-সবজি ও ফলমূল প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপনন কার্যক্রম সম্প্রসারণ কর্মসূচির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর তৌহিদ মো. রাশেদ খান জানান, আগামী মন্ত্রী পরিষদ বৈঠকে উপস্থাপন সাপেক্ষে আইনটি অনুমোদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ গত ৫ ফেব্রুয়ারি কৃষি বিপনন আইন’২০১৮ এর খসড়া মন্ত্রীসভা বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করেন। কৃষি পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার মাধ্যমে উৎপাদক ও ক্রেতার স্বার্থ সংরক্ষণ এবং সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে অভিভক্ত ভারত উপমহাদেশে ১৯২৮ সালে ‘রয়েল কমিশন অন এগ্রিকালচার’ এর সুপারিশের ভিত্তিতে ১৯৩৪ সালে কৃষি বিপনন অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে দেশে উৎপাদিত কৃষিজাত পন্য গুদামজাতকরণ সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনার জন্য ১৯৫৯ সালে দি ওয়ারহাউস অর্ডিনেন্স,১৯৫৯ এবং কৃষি পণ্যের কেনা-বেচা ও বাজারগুলো নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে ১৯৬৪ সালে দি এগ্রিকালচারাল প্রোডিউস মার্কেটস রেজুলেশন এ্যাক্ট,১৯৬৪ তৈরী করা হয়। দেশের স্বাধীনতার পর বাজার ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ১৯৮৫ সালে দি এগ্রিকারচারাল প্রোডিউস মার্কেটস রেজুলেশন(এ্যামেন্ডমেন্ট) অর্ডিনেন্স, ১৯৮৫ তৈরী করা হয়। বাজার ব্যবস্থাপনার জন্য ওই আইন ইংরেজি ভাষায় তৈরী। বৃটিশ ও পাকিস্তান আমলে ইংরেজি ভাষায় তৈরী আইনগুলো দরকারি পরিবর্তন ও সংশোধন সাপেক্ষে বাংলাভাষায় তৈরীর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ২০১৫ সালের ২ নভেম্বর মন্ত্রীসভা বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওই সিদ্ধান্তের আলোকে ইংরেজি আইনগুলো পরিবর্তন ও সংশোধন সাপেক্ষে বাংলা ভাষায় একটি নতুন আইন তৈরীর জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নেয়।
মুক্তবাজার অর্থনীতির প্রভাবে বাজার ব্যবস্থাপনার ব্যাপক পরিবর্তনে কৃষকের উৎপাদিত ফসল ও অন্যান্য কৃষি পণ্যের উপযুক্ত দামপ্রাপ্তি নিশ্চিত করাসহ অন্যান্য কাজ পরিচালনায় কৃষি বিপনন অধিদপ্তর ঢেলে সাজানোর দরকার হয়। কৃষি বিপনন অধিদপ্তর পুনর্গঠনের মাধ্যেমে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করতে প্রধানমন্ত্রী নীতিগত সম্মতি দেন। এ প্রেক্ষিতে বাস্তবতা ও দরকারের নিরিখে কৃষি বিপনন অধিদপ্তরে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পদ সৃষ্টি করা হয়। সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের মতামতের ভিত্তিতে প্রস্তাবিত আইনে মোট ৮(আট)টি অধ্যায়, ৩৩(তেত্রিশ)টি ধারা ও ২(দুই)টি তফশিল রয়েছে। আইনের খসড়াটি ২০১৭ সালের ১১ মে সচিব কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হয়। কৃষি বিপনন আইন, ২০১৭ অনুমোদন প্রক্রিয়ায় ২০১৭ সাল অতিবাহিত হয়। এ কারণে আইনটি কৃষি বিপনন আইন,২০১৮ হিসেবে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হয়। কৃষি মন্ত্রী আইনের সার-সংক্ষেপ দেখে অনুমোদন দেন এবং মন্ত্রী পরিষদ বিভাগে পাঠাতে সম্মত হন। বর্তমানে আইনটি মন্ত্রীসভা বৈঠকে উপস্থাপনের অপেক্ষায় রয়েছে। আইনটি পাশ হলে কৃষি উৎপাদন এবং বিপনন কাজে গতি আসবে ও দেশের কৃষি অর্থনীতি শক্তিশালি হবে।