তিন অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রকল্পের সংশোধনীতে ব্যয় বাড়ছে ২৫০০ কোটি টাকা
সাইদ রিপন: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্যোগের প্রকল্পে প্রথম সংশোধনীতে ব্যয় বাড়ছে দুই হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা। অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের নিমিত্ত ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্প আড়াইহাজার, নারায়নগঞ্জ ও মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রথম সংশোধনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব করা হয়েছে। সংশোধনী ডিপিপিতে বলা হয়েছে, প্রায় ৫০০ একর ভূমি অধিগ্রহণ এবং পুনর্বাসন ব্যয়, জরিপ, নকশা, প্রচার ও বিজ্ঞাপনখাত অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় প্রকল্পটির ব্যয় প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা বাড়ছে। প্রকল্পটি আগামীকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সংশোধনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানিয়েছে, বেজার গভর্ণিং বোর্ডের সভায় নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় এবং চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়। অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও জমির প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে এ দুটি প্রকল্প এলাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে ২০১৫ সালে অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) গভর্ণিং বোর্ডের সভায় জাপানি বিনিয়োগকারীদের জন্য নির্ধারিত অর্থনৈতিক অঞ্চলের জমি অধিগ্রহণের জন্য এডিপি থেকে অর্থায়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্যদিকে মিরসরাইয়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আড়াইহাজার ও মিরসরাইয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের লক্ষ্যে ভূমি অধিগ্রহণ করতে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে মোট ৭৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৭ সালে একনেকে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে জাপানি বিনিয়োগকারীদের চাহিদার প্রেক্ষিতে আড়াইহাজারে অতিরিক্ত ৫০০ একর জমি অধিগ্রহণসহ আরো আনুষাঙ্গিক ব্যয় বৃদ্ধির জন্য প্রকল্পটি সংশোধন করা হচ্ছে। এছাড়াও প্রকল্পটি সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত মানবসম্পদ উন্নয়নের উদ্দেশ্যে ও এসডিজির বেশ কয়েকটি লক্ষ্যমাত্রার সাথে সংগতিপূর্ণ।
সূত্র আরো জানায়, মূল অনুমোদিত ডিপিপিতে প্রকল্পের আওতায় আড়াইহাজারে ৪৯১.৪৮ একর এবং মিরসরাইয়ে ৫০০ একর জমি অধিগ্রহণের সংস্থান ছিলো। জাপানি ডেভেলপারের চাহিদার প্রেক্ষিতে আড়াইহাজারে অতিরিক্ত ৫০০ একর জমি নতুনভাবে অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রথম সংশোধনীতে অতিরিক্ত জমির মূল্য বাবদ এক হাজার ৭৭১ কোটি টাকা প্রয়োজন। বর্তমানে শুধু ভূমি অধিগ্রহণেই মোট ব্যয় হবে দুই হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য শামীমা নার্গিস বলেন, জাপানি ডেভেলপারের চাহিদার প্রেক্ষিতে আড়াইহাজার অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য অতিরিক্ত ৫০০ একর জমি প্রয়োজন। এছাড়া প্রকল্পের জন্য নতুন করে ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসন কার্যক্রমের জন্য ৪৮২ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রয়োজন। সংশোধনীতে প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদও ছয়মাস বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রকল্পটি সংশোধনের পরে এটি বাস্তবায়ন হলে আড়াইহাজার অঞ্চলের আয়তন দ্বিগুণ হবে এবং এখানে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আরো বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এজন্য প্রকল্পটি সংশোধনের জন্য আগামী একনেকে উপস্থাপন করা হতে পারে।