আদম মালেক: গৃহায়ণ ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলো সুদ ছাড়াও মোট ঋণের ওপর নানা ধরনের সেবার ফি ও কমিশন আরোপ করেছে। এর মধ্যে ঋণ প্রসেসিং ফি, রেজিস্ট্রেশন ফি, যাচাই ফি, মনিটরিং ফি, হিসাব খোলা ও পরিচালনার ফি আদায় করছে। এর মধ্যে ব্যাংক ভেদে ঋণ মঞ্জুর প্রক্রিয়া ফি ০.৫০ থেকে ১.৫ শতাংশ আদায় করে। অনেক ব্যাংক গৃহায়ণ খাতের ঋণ বাইরের কোন এজেন্সি দিয়ে তদারকি করে। এক্ষেত্রে তারা আলাদা ১ শতাংশ হারে ঋণ তদারকির জন্য ফি বাড়তি আদায় করে। ঋণ দেয়ার আগে কোনো কোনো ব্যাংক জমি বা ফ্ল্যাটের ব্যাপারে আলাদা কোনো এজেন্সি দিয়ে খোঁজ খবর করায়। এক্ষেত্রে মোট ঋণের বিপরীতে ১ থেকে দেড় শতাংশ হারে বাড়তি ফি আদায় করে। এসব কারণে ঋণের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, গৃহ ঋণে সুদের হার কমানো উচিত নইলে ঋণ প্রবাহ বাড়বে না। ৫ শতাংশ সুদে গৃহঋণ বিতরণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক সময় ৫শ’ কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছিল। এখন নেই।
তত্ত্ববাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেছেন, গৃহঋণে সুদহার কমাতে হলে খেলাপি ঋণের লাগাম টানতে হবে। নইলে কোন কাজ হবে না।
সূত্র জানায়, গৃহায়ণ ঋণের বিপরীতে ইস্টার্ন ব্যাংক সাড়ে ১০ শতাংশ, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক সাড়ে ৯ থেকে সাড়ে ১০ শতাংশ, হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স সাড়ে ৮ থেকে সাড়ে ৯ শতাংশ, সিটি ব্যাংক সাড়ে ১১ শতাংশ, ওয়ান ব্যাংক ১১ শতাংশ, ইউসিবি ১১ শতাংশ, আইএফআইসি ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ, প্রাইম ব্যাংক সাড়ে ১১ থেকে ১৩ শতাংশ, লঙ্কাবাংলা ১৪ শতাংশ, আইডিএলসি সাড়ে ১৩ শতাংশ, ব্যাংক এশিয়া ১১ শতাংশ, ডিবিএইচ ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশ, মিডল্যান্ড ব্যাংক সাড়ে ১১ থেকে সাড়ে ১২ শতাংশ, এনআরবি ব্যাংক ১১ থেকে ১২ শতাংশ, প্রিমিয়ার ব্যাংক সাড়ে ১২ শতাংশ, প্রিমিয়ার ব্যাংক সাড়ে ১২ শতাংশ, এবি ব্যাংক সাড়ে ১২ শতাংশ, আইপিডিসি ১৪ দশমিক ২৫ থেকে ১৬ দশমিক ২৫ শতাংশ, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ১২ শতাংশ মার্কেন্টাইল ব্যাংক ১৩ শতাংশ এবং শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক গৃহঋণে ১১ থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত সুদ নিচ্ছে। তবে এ সময়ে শুধু ডাচবাংলা ব্যাংকের গৃহঋণের সুদের হার ছিল ৯ শতাংশ।
সরকারি খাতের চারটি বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও রূপালী ব্যাংক এ খাতে সুদের হার ৯ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ গৃহায়ণ ঋণ দান সংস্থাও এ খাতে ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশে নামিয়ে এসেছে। তবে এর বিপরীতে নানা সার্ভিস চার্জের কারণে এ হার আরও বেশি পড়ছে