মতিনুজ্জামান মিটু: বছরে পাঁচ থেকে ছয়বার চাষ করা যায়। ৩৩ শতাংশের বিঘা প্রতি দুই থেকে তিন লাখ টাকার ফল পাওয়া যায়। একবারের তৈরী করা গাছে ২০ থেকে ৩০ বছর যাবত ফল পাওয়া যায়। প্রতিটি গাছে ১০০ থেকে ২০০ ফল হয়ে থাকে। উৎপাদন খরচ অন্যান্য ফল ও ফসলের চেয়ে কম। নিট লাভের পরিমাণ বেশি। আভ্যন্তরিণ বাজারসহ বিদেশেও চাহিদা প্রচুর। এসব কারণে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে বিদেশি ফল ড্রাগনের বাণিজ্যিক চাষ। কৃষিবিদ গোলাম মাওলা বলেন, রড ও সিমেন্ট দিয়ে পোস্ট তৈরীসহ ড্রাগন চাষের প্রাথমিক খরচ বেশি হলেও এটি লাভজনক। তাই দেশে দ্রুত বাড়ছে এই ফলের বাণিজ্যিক চাষ। দেড় লাখ টাকার মতো খরচ করে এক বিঘা জমিতে ড্রাগন ফল চাষ করা যায়। তিনি বলেন, পুষ্টি সমৃদ্ধ এই ফলের যথেষ্ট ঔষধিগুণও রয়েছে। এছাড়া সাদা ড্রাগন ফল জেলি এবং ফেসিয়াল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আমাদের দেশে আমেরিকা, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতমামী জাতের ড্রাগন চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে আমেরিকার লাল রং এর ড্রাগন বাচ্চারা বেশি পছন্দ করে। বাংলাদেশে ক্রমান্বয়ে ড্রাগন ফলের চাষ ও উৎপাদন বাড়ছে। ২০১৬ -২০১৭ সালে দেশের ৫৪ হেক্টর জমি চাষ করে ৪৩১ মেট্রিক টন ড্রাগন ফল উৎপাদন হয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হর্টিকালচার উইং এর উপ পরিচালক ( ফুল ও ফল) এ কে এম মনিরুল আলম। ২০১৪- ২০১৫ সালে দেশে ১৮ হেক্টর জমি চাষে ৬৬ মেট্রিক টন ড্রাগন উৎপাদন হয়েছিল।
২০০৫ সালে গবেষণার মাধ্যমে উপযোগিতা যাচাই শেষে ২০১১- ২০১২ সাল থেকে মাঠ পর্যায়ে এ ফলের চাষ শুরু হয়। দেশের রংপুর, নাটোর, মাগুরা, জামালপুর ও পার্বত্য জেলাগুলোতে এ ফলের চাষ বেশি হচ্ছে। দেশের চেইন শপগুলোতে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি এবং চাষি পর্যায়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে ড্রাগন ফল বিক্রি হচ্ছে।
ড্রাগন ফল গ্রীষ্ম মন্ডলীয়। এটি দ্রুতবর্ধনশীল ক্যাকটাস গাছ। গ্রীষ্ম মন্ডলীয় অন্যান্য ক্যাকটাসের সঙ্গে এর ভিন্নতা এই যে, এটি দ্রুত বাড়ে এবং বেশি পানি গ্রহণ করে। তবে এটি অন্যান্য ক্যাকটাসের মতোই দীর্ঘ খরা সহ্য করতে পারে। ভাল ফলনের জন্য সুর্যের আলো দরকার। বর্তমানে বিশ্বের নতুন ফল হিসেবে বাংলাদেশেও এ ফল খুবই জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অদিদপ্তরের সমন্বিত মানস্পন্ন উদ্যান উন্নয়ন প্রকল্প এবং বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এদেশে ড্রাগন ফলের বিস্তারে নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।