ডা. মো. তাজুল ইসলাম : কিছুদিন আগে গাড়ি চালকদের একটি সাক্ষাৎকার পড়ছিলাম, সেখানে তারা বলছেন, গাড়ির চাপায় পিষ্ট আহত যাত্রীর চেয়ে নিহত যাত্রী অনেক ভালো! কারণ যাত্রী বেঁচে গেলে, মামলা মোকাবিলা ও ক্ষতিপূরণসহ অনেককিছু দিতে হয়। কিন্তু যাত্রী মারা গেলে পত্রপত্রিকায় দুইচারদিন লেখালেখি হয়, এর বেশি কিছু হয় না। এতে ফাঁসির বিষয়ও আসে না। আহত যাত্রীদের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দিয়ে নাকি তাদের মেরে ফেলা হয়! যেটা ঘটেছিল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র পায়েলের বেলায়। কত নিষ্ঠুর, বিকৃত মানসিকতা চালকদের। নিজেকে বাঁচানোর জন্য নির্মম নিষ্ঠুরতা চলছে। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মানাও যায় না।
কীভাবে মানুষ এতটা নিষ্ঠুর হয়? লোভ ও ক্ষমতা। ক্ষমতার জন্য মানুষ যেকোনো নিষ্ঠুর কাজ করতে পারে। বিবেকহীন, মানবিক মূল্যবোধহীন মানুষেরা আইন থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য বড় বড় অপরাধ করতেও তাদের বুক কাঁপে না। নিষ্ঠুরতার চূড়ান্ত রূপ দেখায়। এটা কখনো সুস্থ মানসিকতার মানুষ করতে পারে না। তাই সড়ক পরিবহনের শ্রমিকদের মানসিকভাবে সুস্থতা দিতে কাউন্সিলিংটা করতে হবে। এটা করা জরুরি।
সড়কের পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের নিয়মিত কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। ব্যবসা বা টাকা কামানোতে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু এই পেশা নীতিহীন হয়ে গেলে মানুষের বিরাট ক্ষতি হবে। এ নীতিবোধ মাথায় রেখেই পরিবহন পেশায় থাকতে হবে। নিয়োগ দিতে হবে নীতিবোধ আছে এমন মানুষকেই। পরিবহন শ্রমিকদের নিয়মিত কাউন্সিলিং বা অন্যান্য প্রশিক্ষণেও রাখতে হবে।
লেখক : অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট