তরিকুল ইসলাম: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের প্রস্তুতি সরজমিন দেখতে আজ বুধবার মধ্যরাতে রাখাইন যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। যদিও চীনের পরামর্শে দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায় বাংলাদেশ। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের উদ্বেগের বিষয়টিও বিবেচনায় রেখেই মাহমুদ আলীর এ সফর বলে জানিয়েছে ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল এর আগে জানিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে রাখাইন রাজ্য সরজমিন দেখতে শিগগির মিয়ানমার সফরে যাবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী। তিনি বলেন, আবাসন সুবিধা, চলাফেরা ও জীবনযাত্রাসহ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার অগ্রগতি দেখতে যাবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণাল সূত্র বলছে, দ্বিপক্ষীয় চুক্তি এবং আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়কে দেয়া অঙ্গীকার অনুযায়ী মিয়ানমার রাখাইনে প্রত্যাবাসন উপযোগী রোহিঙ্গাদের জন্য ঘরবাড়ি, সুযোগ-সুবিধা, চলাফেরা এবং জীবিকার কি ব্যবস্থা করেছে সে সম্পর্কে জানা এবং দেখাই হবে মন্ত্রীর সফরের মুখ্য উদ্দেশ্য। গত জুন মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বেইজিং সফরে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলের ইউনিয়ন মন্ত্রী চাও থিন সোয়ের বৈঠক হয়।
বেইজিংয়ে এক অনুষ্ঠানের চা বিরতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী ও সুচি সরকারের মন্ত্রী চাও থিন সোয়ে উভয়ের উপস্থিতিতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই রাখাইন রাজ্যের সমস্যা সঠিকভাবে সমাধানের জন্য আলোচনা করেন। বৈঠকে চীনের তরফে পরিস্থিতি যাই হোক, যেসব রোহিঙ্গাকে গ্রহণে মিয়ানমার অনাপত্তি দিয়েছে তাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করতে বাংলাদশের প্রতি পরামর্শ দেয় চীন।
প্রত্যাবাসন সম্পন্ন হওয়ার পর যেসব জটিলতা ধরা পড়বে তা নিরসনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে আলোচনা ও মধ্যস্থতা করবে চীন। সেখানে দ্রুত প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আলোচনা হয়। মিয়ানমারের তরফে প্রস্তুতির কথা ব্যক্ত করা হয়।
গত মাসে ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুয়ো বলেছেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোই এখন ‘সবচেয়ে জরুরি’ বিষয় বলে মনে করছে তার দেশ। সে সময় তিনি বলেন, একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার মতৈক্যে পৌঁছেছে যে, তিন ধাপে রাখাইনের পরিবেশ উন্নয়নে তাদের চেষ্টা করা উচিত। ধাপগুলো হল- সহিংসতা বন্ধ, যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যাবাসন শুরু এবং সেখানে উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া।