স্বপ্না চক্রবর্তী: রাজধানীর মগবাজার নয়াটোলার চেয়ারম্যান গলি, খেঁজুর গাছের গলি, ডাক্তার গলির প্রায় সবগুলো বাড়িতেই গ্যাস থাকে না সকাল ৬ থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত। এসব জায়গায় কখনো মিটমিট করে আগুন জ্বলে আবার কখনো আগুনই ধরানো যায় না। ওই এলাকার টিএন্ডটি কলোনির বাসিন্দা সাংবাদিক জিনাত জেন কবীর আমাদের অর্থনীতিকে বলেন, বেশির ভাগ দিনই গ্যাসের অভাবে বাসায় খাওয়া দাওয়া করতে পারছি না। অফিস থেকে বাসায় এসে আবার রাত ১১টার আগে রান্নাও করতে পারছি না। এতে করে স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হচ্ছে চরমভাবে। এই বিষয়ে কথা বলতে তিতাসের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাদের কোনো সাড়া পাওয়া যায় নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি। একই কথা বলেন চেয়ারম্যান গলির সরকারি চাকরিজীবি রেহানা আক্তারও। তিনি বলেন, সারাদিনের জন্য বাসা থেকে বের হই অফিসের উদ্দেশ্যে। কিন্তু চুলায় গ্যাস না থাকায় নাস্তাটাও ঠিকঠাক করতে পারি না প্রায় ১সপ্তাহ। বাধ্য হয়েই বাইরের খাবার খেতে হচ্ছে। এতে করে যেমন বাড়তি টাকা খরচ হচ্ছে তেমনি শরীরেও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হচ্ছে।
শুধু নয়াটোলাতেই নয় রাজধানীর মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, আদাবর, মিরপুর, পল্লবী, কাফরুল, কাজীপাড়া, ইন্দিরা রোড, কলাবাগান, শুক্রাবাদ, কাঁঠালবাগান, মগবাজার, মালিবাগ, রামপুরা, বনশ্রী, বাসাবোসহ আরও বেশ কয়েকটি এলাকায় ঘুরেও গ্যাসের সমস্যা দেখা গিয়েছে। ওইসব এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ আগে শুধু শীতের সময়ই চুলায় গ্যাসের চাপ কম থাকতো। কিন্তু এখন এই তীব্র গরমেও গ্যাসের অভাবে বাড়িগুলোতে চুলা জ্বলছে না। অবস্থাম্পন্ন বাড়িগুলোতে রান্না হচ্ছে ইলেকট্রিক কুকারে। কারো কারো ভরসা আবার এলপিজি।
এ অবস্থা চলতে থাকলে গ্যাসের অভাবে জনজীবন আরও দুবির্ষহ হয়ে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল আলম। তিনি বলেন, আমরা জানি চাহিদার তুলনায় গ্যাসের সংকট রয়েছে। কিন্তু গ্যাস কোম্পানীগুলো চাইলেই একটি সুষ্ঠু বন্টনের মাধ্যমে আবাসিক খাতের গ্যাসীয় চাহিদা পূরণ করতে পারে। তাছাড়া জাতীয় গ্রীডের সাথে এলএনজি যুক্ত হলেও এই সংকট কিছুটা কাটবে বলে মনে করেন তিনি।
পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দৈনিক ১০০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে। এর মধ্যে উৎপাদন কমে গেছে আরও কয়েকটি গ্যাসক্ষেত্রের। সংস্কারের কারণে গ্যাস উত্তোলন বন্ধ আরও কয়েকটি কূপের। এই জন্য এ সংকট আরও বেড়েছে বলে জানা যায়।