তরিকুল ইসলাম সুমন: নতুন করে আর কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হবে না বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান। গতকাল বুধবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েন বাংলাদেশ (এবার) সংগঠনের সঙ্গে এক বৈঠকে মন্ত্রী এ কথা বলেন। মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সারাদেশে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রায় ৭০ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। হাওর-বাঁওড় থেকে শুরু করে সকল জায়গায় প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এমন কোনো স্থান নেই যেখানে দুই কিলোমিটারের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। তাই নতুন করে আর কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করার পরিকল্পনা নেই।
তিনি আরো বলেন, দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গামী ছয় থেকে ১১ বছরের শিশুদের ৯৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ মিড-মিলের আওতায় এসেছে এবং আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে শতভাগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। আমি সব মাকে কথা দিয়েছিলাম যেদিন এটা করতে পারবো, সেদিন আমি সংসদে দাঁড়িয়ে মায়েদের অভিনন্দন জানাবো, স্যালুট করবো।
মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার বলেন, যখন মিডডে মিল পলিসি হতে যাচ্ছে তখন বিশেষজ্ঞরা বললেন, শিশুদের দুপুরের পর খিদে লাগলে আর পড়াশোনায় মনোযোগ থাকে না। তাহলে কী করতে হবে? তারা বললেন, খাবার দিতে হবে। কে দেবে? তারা বললেন, সরকার দেবে। কেন সরকার দেবে? তারা বললেন, বই দেয় সরকার, উপবৃত্তি দেয় সরকার, স্কুলে নিয়ে আসে সরকার, তাই খাবার দেবে সরকার। তাহলে বাবা-মার অবদান কী? তাই সোশ্যাল মোবিলাইজেশনের উদ্যোগ নিলাম।
তিনি বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তথ্যসংবলিত বই দিলাম। বাংলাদেশে এখন টিফিন বাটিতে করে মায়েরা সকালে যে খাবার খায়, সেটাই দিয়ে দেয় দুপুরে খাওয়ার জন্য। শিশুদের প্রতি মায়ের এই মনোযোগ এবং শিশুরাও জানলো দৈনন্দিন মা তার জন্য কী করেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে রিপোর্ট দিয়েছি, তাতে ৯৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ শিশু তাদের মায়ের খাবার নিয়ে স্কুলে আসে। এখন ছাত্র-শিক্ষক একসঙ্গে বসে স্কুলে দুপুরের খাবার খায়। আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রাখলে শতভাগ করতে পারবো। মিডডে মিল চালু রাখতে বছরে ২৫ হাজার কোটি টাকা লাগতো। আমাদের ২৫ টাকাও খরচ হয়নি।’
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ২৬ হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়েছে। তিনটি ধাপে এসব বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়েছে। বর্তমানে রাজধানীসহ দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে দৃষ্টিনন্দন করে তুলতে আমরা ১৪ শত কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছি। খুব দ্রুত এ প্রকল্প জাতীয় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এই প্রকল্প অনুমোদ পেলে সকল সরকরি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো নতুন করে ঢেলে সাজানো হবে। সম্পাদনা: আনিস রহমান