কোটা নিয়ে সরকারের অবস্থান কী?
খালেকুজ্জামান
কোটা সংস্কারের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট বক্তব্য আসা উচিত। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত যারা তারা একধরনের অরাজকতা, অনিয়ম-বিশৃঙ্খলার প্রতি অঙ্গুলি নির্দেশ করেছিল। এবং সংস্কার চেয়েছিল। ফলে তাদের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সেটা অন্যায়। অবিলম্বে আমরা তাদের মুক্তি চাই।
পিছিয়ে পড়া অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে আনার অংশ হিসেবেই কোটা প্রশ্ন এসেছিল। সেটা গ্রাম-শহর যেখানেই হোক, নারী-পুরুষ, প্রতিবন্ধী হোক না কেন, তাদের শিক্ষা, স্বাস্থসেবা, সামাজিকসহ সমস্ত ক্ষেত্রে যাদে দারা এগিয়ে আসতে পারে, সেজন্যই রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে উদ্যোগ ছিল। মুক্তিযোদ্ধা কোটা ব্যবস্থা ছিল তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন। এবং তার স্বীকৃতি প্রদান। কিন্তু আজ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সঠিক তালিকা পর্যন্ত আমরা করতে পারিনি। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট নিয়ে একবার সচিব পাঁচজন ধরাও পড়েছিলেন। তাদের কি এখনো পর্যন্ত কোনোরকম শাস্তি হয়েছে?
অনেকেই বলছিলেন, বহুদিন ধরে কোনো প্রতিবাদ নেই। কিন্তু কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী রাস্তায় নেমে এল। ওই আন্দোলন দমন করা পর মনে হলো সব শান্ত হয়ে আছে। কিন্তু কিছুদিন পর আবারও দেখলাম শিশু-কিশোররা মাঠে নেমে এসেছে। নিরব থাকা মানে জনসাধারণ কোনো অন্যায়কেই সমর্থন করছে না।
অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমে আসার জন্য সে ধরনের নেতৃত্ব তাদের চোখের সামনে এখনো পর্যন্ত দৃশ্যমান নেই বলে মনে হচ্ছে জনসাধারণ থমকে আছে। তারা বোধ হয় কিছুই বুঝছে না, অন্যায়ের প্রতিকারে আগ্রহী নয়। স্বতস্ফুর্ত বাঁধভাঙ্গা জোয়ারের মতো যদি মানুষ রাস্তায় নামে তাহলে সেটা নেতৃত্বহীন অবস্থায় দেশের জন্য খুব ভালো হয় না। তার অর্থ এই নয়, মানুষ এভাবে চিরকাল বসে থাকবে। একটা সুনির্দিষ্ট নেতৃত্ব মানুষের সামনে অনুপস্থিত থাকবে।
পরিচিতি : সাধারণ সম্পাদক, বাসদ