নবায়নযোগ্য জ্বালানীখাতের অন্তরায় দুর্নীতি-রাজনৈতিক স্বেছাচারিতা
আহমেদ ইসমাম: অনিয়ম দুর্নীতি ও রাজনৈতিক সেছাচারিতা নবায়নযোগ্য জ্বালানীখাতকে দাড়াতে দিচ্ছে না। গতকাল গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘অপ্রতিরোধ্য এক বিপ্লব চলমান! শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানির পথে সারাবিশ্ব’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. বদরুল ইমাম বলেছেন, এদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে না। ২০২১ সাল নাগাদ জাতীয় গ্রিডে মোট ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ করবে সরকার। সেখানে ১০ ভাগ সোলার থেকে উৎপন্ন হবে। সরকারের এমন পরিকল্পনা থাকলেও সে অনুযায়ী কোনো কাজ হয়নি। বর্তমানে যে হারে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপন্ন হচ্ছে তাতে ২ ভাগও সম্ভব নয়। বর্তমানে ৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সৌর প্যানেল থেকে উৎপন্ন হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, টেকনাফে কিছু দিনের মধ্যে আরো ২৮ মেগাওয়াটের একটি প্লান্ট চালু হওয়ার কথা রয়েছে। এই হলো বাস্তব অবস্থা। সুলতানা কামাল বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে ঝুঁকি এবং দূষণ দু’ই কম। অনিয়ম, দুর্নীতি আর রাজনৈতিক স্বেচ্ছাচারিতা এই খাতকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দিচ্ছে না।
অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ বলেছেন, সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে না গিয়ে কারো কারো স্বার্থ রক্ষার জন্য গ্যাস ও কয়লায় জোর দিচ্ছে। অথচ আমরা গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পক্ষে নই। এছাড়া কয়লার ব্যবহারও যতোটা সম্ভব কমাতে হবে। আর রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রতো কোনোভাবেই করা সমীচীন হবে না।
অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ বলেছেন, ৪০ বছর আগে বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে কাজ শুরু করলেও সন্তোষজনক জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি। এই খাতে বিপ্লব প্রয়োজন। একজন বুদ্ধিমান লোক যদি কোনো কথা ১০ মিনিটে বুঝতে পারেন তবে সেই কথাটি একটি জাতিকে বোঝতে ৫০ বছর সময় লাগে। কেননা একটি জাতির মধ্যে নানা জাতের, নানা মতের মানুষ থাকে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি ও ব্লু প্লানেট ইনিশিয়েটিভ (বিপিআই) সম্মিলিতভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে।
বাপার সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সভাপতি ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিশেষজ্ঞ সাজিদ কামাল, অর্থনীতিবিদ এমএম আকাশ, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. বদরুল ইমাম, ড. সাইফুল ইসলাম এবং আরো অনেকে।