কাঁদলেন এশিয়াডে সোনাজয়ী স্বপ্না’র মা
স্পোর্টস ডেস্ক : ভারতের ইতিহাসে প্রথম অ্যাথলিট হিসেবে এশিয়ান গেমসের হেপ্টাথলন (বর্শা নিক্ষেপ) ইভেন্টে সোনা জিতেছেন। এরপরই গোটা দেশ তার সাফল্যে কুর্ণিশ জানাচ্ছে। পশ্চিত বাংলার জলপাইগুড়ির প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘোষপাড়ায় চোখ ছিল গোটা দেশের। মেয়ে জাকার্তায় দেশকে সোনা জেতানোর কঠিন লড়াই লড়ছেন। বাড়িতে মা-বাবার অবস্থা দেখার জন্য গোটা দেশ অধীর আগ্রহে বসে ছিল। অপেক্ষা ছিল, স্বপ্না বর্মন এশিয়াডে পদক জয়ের পর তার মা-বাবার প্রথম প্রতিক্রিয়া কেমন হয়!
সেই ছবি সারা পৃথিবীর মানুষে দেখা হয়ে গিয়েছে। সেখানেই দেখা গেছে স্বপ্নার মায়ের আবেগী কান্নার ছবি। দারিদ্র্যকে জয় করে দেশকে সোনা উপহার দিয়ে স্বপ্না এখন বঙ্গরতœ! দারিদ্রতা জয় করে এমন পর্যায়ে আসার পর অনেক কিছুর উত্তর দিয়েছেন স্বপ্না। মেয়ের দেওয়া সেই অনেক কিছুর জবাবের পর নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেননি স্বপ্নার মা বাসন্তী দেবী। বাড়িতে বসে সবার সঙ্গে খেলা দেখতে দেখতে সোনা জয়ের পরই হাউ হাউ করে কেঁদে ফেলেন বাসন্তী দেবী। তারপর লুটিয়ে পড়েন ঠাকুরের চরণে। কাঁদতে কাঁদতে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
মেয়ে স্বপ্না বর্মনের এমন সাফল্যের পর মা বাসন্তীদেবী নিজেকে আর যেন সামলাতে পারছিলেন না। ভারতকে সোনা জিতিয়ে উঠে নিজের যন্ত্রণার কথা জানান স্বপ্না। জন্ম থেকেই এক বিরল রোগ বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন স্বপ্না। দুই পায়ে ছয়টি করে মোট বারোটা আঙুল তার। ফলে আর পাঁচজন অ্যাথলিটের মতো লড়াই ছিল না। একে তো গরীব বাড়ির মেয়ে। তার উপর পায়ে এমন সমস্যা। খুব কঠিন সংগ্রাম করে দেশের এশিয়াড স্কোয়াডে জায়গা পেয়েছিলেন।
আর সেখানেই সোনা জেতার পর জানান নিজের একটি চাওয়ার কথা। কিন্তু কী সেই চাওয়া? স্বপ্নার চাওয়াটা আহামরি বড় নয়, তিনি চেয়েছেন এক জোড়া জুতো! স্বপ্না বলছিলেন, ‘দেশের জন্য সোনার পদক জিতলাম। তবে এর জন্য আমার প্রচুর অসুবিধা হয়অ। আমি আর পাঁচজন অ্যাথলিটের মতো সাধারণ স্পোর্টস শু পরে দৌড়াই। বাকিদের পায়ে পাঁচটা করে আঙুল, কিন্তু আমার ছয়টা। তাই সাধারণ স্পোর্টস শু পরে দৌড়তে আমার খুব কষ্ট হয়। কোন কোম্পানি যদি আমার জন্য বিশেষ ধরনের জুতো বানিয় দিলে কষ্টটা একটু কম হতো।’