ভোগ্যপণ্যে প্রতারণার দায়ে দুই মাসে ২ কোটি টাকা জরিমানা
ফয়সাল মেহেদী: ভোগ্যপণ্যে প্রতারণা করায় চলতি অর্থবছরের প্রথম দুইমাসে ২ হাজার ৬৩০টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এসময় প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ২ কোটি ৭ লাখ ৫ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এর মধ্যে ২ কোটি ২ লাখ ৮৮ হাজার ৪৫০ টাকা জমা করা হয়েছে সরকারী কোষাগারে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ভেজাল পণ্য তৈরি, পচা-বাসি বা মেয়াদউত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি, ওজন ও পরিমাপে কারচুপি, নির্ধারিত মূল্যের অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রিসহ সংগঠিত ভোক্তাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৮৭৫টি বাজারে অভিযান পরিচালনা ও ৭৩৯টি লিখিত অভিযোগ নিষ্পত্তির মাধ্যমে ২ কোটি ৭ লাখ ৫ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা আদায় হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ শতাংশ হিসাবে ১৯৭ জন অভিযোগকারীকে ৪ লাখ ১৬ হাজার ৭৫০ টাকা প্রদান করা হয়। বাকি টাকা সরকারী কোষাগারে জমা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম লস্কর এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রচার-প্রচারণা ও ভোক্তাদের সচেতনতার কারণে জরিমানা আদায় ক্রমেই বাড়ছে। অভিযোগ যত বেশি আসবে এবং বাজার অভিযান যত বাড়বে ততই জরিমানা আদায় হবে। একই সঙ্গে সরকারের আয়ও বাড়বে। তিনি বলেন, অভিযোগ নিষ্পত্তির ব্যাপারে আমাদের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। শিগগিরই অ্যাপস চালু করা হবে। তখন খুব সহজে, দ্রুত সময়ে অভিযোগ দাখিল করতে পারবেন প্রতারিত ভোক্তারা।
এর আগে সদ্য বিদায়ী ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১৩ হাজার ৬০২টি প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ১৩ কোটি ৯৯ লাখ ৮৫ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এর আগে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১০ হাজার ৭২৯টি প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ৬ কোটি ৮৭ লাখ ৯ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছিল। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে জরিমানা আদায় বাড়ে ২.০৪ গুণ বা ৭ কোটি ১২ লাখ ৭৬ হাজার ৪০০ টাকা। শতকরা হিসাবে যা ১০৩.৭৪ শতাংশ।
আদায় করা ওই জরিমানার মধ্যে ১৩ কোটি ৬০ লাখ ৫৮ হাজার ৯৫০ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়। যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ১০২.৬০ শতাংশ বা ৬ কোটি ৮৯ রাখ ১ হাজার ৩২৭ টাকা বেশি। আর ২৫ শতাংশ হিসাবে বাকি ৩৯ লাখ ২৬ হাজার ৭৫০ টাকা পেয়েছেন ১ হাজার ৯৫২ জন অভিযোগকারী ভোক্তা। এর আগের বছর ১ হাজার ৪১৬ জন ভোক্তা ১৫ লাখ ৫১ হাজার ৬৭৭ টাকা পেয়েছিলেন। সেই হিসাবে অভিযোগের ভিত্তিতে ভোক্তাদের প্রাপ্ত অর্থের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় আড়াই গুণেরও বেশি। আর আগের বছরের তুলনায় ভোক্তাদের অভিযোগ বাড়ে প্রায় দেড়গুণ।