ফাতেমা আহমেদ: দেশে আসা রেমিট্যান্সের মধ্যে প্রধান চারটি দেশ থেকেই এসেছে প্রায় ৫৫ শতাংশ। এই দেশগুলো হলো সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত (দুবাই), যুক্তরাষ্ট্র ও কুয়েত। এই চারটি দেশ থেকে বিদায়ী ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশি টাকায় ৬৭ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশে মোট রেমিট্যান্স আসে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ এক লাখ ২৩ হাজার ১৩২ কোটি টাকা। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, প্রতিবছরের মতো এবারও সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে সৌদি আরব থেকে। বিদায়ী অর্থবছরে এই দেশটি থেকে প্রবাসীরা ২১ হাজার ৩০৩ কোটি টাকার সমপরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন, যা সবগুলো দেশ থেকে আসা রেমিট্যান্সের ১৭.৩০ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা দুবাই থেকে প্রবাসীরা ১৯ হাজার ৯৬৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকার সমপরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। তৃতীয় অবস্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬ হাজার ৪১০ কোটি ৬৪ লাখ টাকার সমপরিমাণ রেমিট্যান্স।
সেই হিসাবে শীর্ষ তিন দেশ থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৫৭ হাজার ৬৭৯ কোটি ৫৭ লাখ টাকার সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা, যা গোটা অর্থবছরে আসা রেমিট্যান্সের ৪৬.৮৪ শতাংশ।
এই তিন দেশ থেকে আসা রেমিট্যান্সের সঙ্গে কুয়েত থেকে আসা ৯ হাজার ৮৬৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকার রেমিট্যান্স যোগ করলে দেখা যায়, এই চারটি দেশ থেকে আসা রেমিট্যান্স সব দেশ থেকে আসা রেমিট্যান্সের ৫৪.৮৫ শতাংশ।
এ ছাড়া মালয়েশিয়া থেকে ৯ হাজার ১০৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা এবং যুক্তরাজ্য থেকে ৯ হাজার ৮৬ কোটি ৩১ লাখ টাকার সমপরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। এই ছয়টি দেশ থেকে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৮৫ হাজার ৭৩৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, যা সব দেশ থেকে আসা রেমিট্যান্সের ৭০ শতাংশ
এই ছয়টি দেশের বাইরে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ওমান থেকে। এই দেশটি থেকে সাত হাজার ৮৭৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকার সমপরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে এসেছে গত অর্থবছরে। কাতার থেকে এসেছে ছয় হাজার ৯৫০ কোটি ৪১ লাখ টাকা, ইতালি থেকে পাঁচ হাজার ৪৩৪ কোটি দুই লাখ টাকা এবং বাহারাইন থেকে এসেছে চার হাজার ৪৫১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিদায়ী অর্থবছরে প্রায় সব দেশ থেকেই আগের অর্থবছরের তুলনায় রেমিট্যান্স বেড়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মালয়েশিয়া থেকে আট হাজার ৭৩০ কোটি টাকার সমপরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে এসেছিল। সেই হিসাবে বিদায়ী ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ২৮৪ কোটি টাকা রেমিট্যান্স বেশি এলেও সম্প্রতি মালয়েশিয়া শ্রমিক নেওয়া এক রকম স্থগিত করে দেওয়ায় ভবিষ্যতে রেমিট্যান্সের এই ধারা অব্যাহত থাকবে কি না তা নিয়ে বড় ধরনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সূত্র : কালের কন্ঠ