
পানির নিচে যাচ্ছে পর্যটন নগরী ব্যাংকক!

ফাতেমা আহমেদ: ছবির মতো সুন্দর শহর ব্যাংকক ভয়ের প্রহর গুণছে। আর সেই ভয়ের নাম বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধি। এখনও যদি পরিবেশ সচেতনতায় জোর দেওয়া না হয় তবে আগামী এক দশকের মধ্যে ডুবে যেতে পারে সৈকতবিলাসীদের সাধের শহর ব্যাংককসহ থাইল্যান্ডের বিস্তীর্ণ এলাকা।
পর্যটন ব্যবসায় এগিয়ে থাকা শহরটিকে সুন্দর করতে কী নেই যে তা তৈরি হয়নি! স্কাই স্ক্যাপার থেকে শুরু করে বিনোদনের হরেক পসরা। পরিস্থিতি বিবেচনা করে চলতি বছরের শেষেই পোল্যান্ডে জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক সম্মেলন। সেখানেই ব্যাংককের প্রাকৃতিক ভাগ্য নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হবে। পর্যটকদের উপবন হিসেবে গড়ে তুলতে গিয়ে ব্যাংকক শহরটি এখন চূড়ান্ত বিপদ সীমায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। সমুদ্রের জলস্তর মাত্র পাঁচ মিটার উঁচুতে থাকা শহরটিতে বিপদের হাতছানি। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জেরে যে কোনদিন ডুবতে পারে সাধের ব্যাংকক। এমনটাই দাবি বিশেষজ্ঞদের।
এমনিতেই বৃষ্টি হলে শহরের বিস্তীর্ণ অংশ পানির তলায় চলে যায়। গত কয়েকবছরে শহরের বিভিন্ন অংশে এতটাই পানি জমতে শুরু করেছে যে যান চলাচলেও নিয়ন্ত্রণ আনা হয়েছে। দূষণ কমাতে ক্যানেল তৈরি করে চলছে বাজারহাট। ক্যানেলের পানিতে বজরা নৌকা ভাসিয়ে চলছে বিকিকিনি। এই ছবি দেখে অনেকেই ব্যাংককে পূর্বের ভেনিস হিসেবে তুলনাও করেছেন। সৌন্দর্যের তুলনার আড়ালে কিন্তু ভয়ের ব্যাপ্তি বেড়েই চলেছে। দূষণের মাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিপদ।
২০৩০-এর মধ্যে শহরের ৪০ শতাংশ পানির তলায় চলে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদি বড়মাপের কোনও সুনামি বা জলোচ্ছ্বাস হয় তাহলে তো কথাই নেই। বিপর্যয় বাড়বে পাল্লা দিয়ে। প্রকৃতির ভয়াবহতাকে রুখতে তৎপর সেদেশের সরকার। তাই ২,৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এক খাল কেটে পাম্পিং স্টেশনের সঙ্গে জোড়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তার সঙ্গে আটটি সুড়ঙ্গের যোগ থাকবে। ব্যাংকক প্লাবিত হলেই কাজ শুরু করবে পাম্পিং স্টেশন। সুড়ঙ্গ দিয়ে পানি বের করে দেওয়া হবে।
পর্যটক টানতে শহরকে বারবার কাটাছেঁড়া করতে গিয়ে ব্যাংককে দেখা দিচ্ছে প্লাবনের আশঙ্কা। অকাল বিপর্যয়ে কাঁপছে ব্যাংকক। এখনই সচেতন না হলে যা ভ্রমণপিপাসুদের কাছে অতীত থাকবে নজরকাড়া ব্যাংকক সিটি। সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
