এস এম নূর মোহাম্মদ: জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করতে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারে বসছে আদালত। যেখানে কারাবন্দী রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
আইন মন্ত্রণালয়ের গেজেটে বলা হয়, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচার কার্যক্রম আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে চলার সময় এলাকাটি জনাকীর্ণ থাকে। তাই নিরাপত্তাজনিত কারণে বিশেষ জজ আদালত-৫ এ চলমান ওই মামলার কার্যক্রম পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের ৭ নং কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। এরআগে সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের জানান, কারাগারে খালেদা জিয়ার বিচার সম্পন্ন করতে গেজেট হবে।
গতকাল ওই মামলার প্রধান প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল জানান, খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কারণে কারাকর্তৃপক্ষ তাকে আদালতে হাজির করতে পারছেন না। ফলে মামলাটি শেষ মুহূর্তে গিয়ে ঠেকে আছে। কোনোভাবেই এগিয়ে নেওয়া যাচ্ছে না। এ পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মামলাটির বিচার পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্থায়ী এজলাসে করার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেছিলাম।
তিনি বলেন, এরই পরিপ্রেক্ষিতে আইন মন্ত্রণালয় মামলাটির বিচার কারাগারে করার বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছেন বলে শুনেছি। এ সম্পর্কিত গেজেট প্রকাশিত হলে বুধবার (আজ) পুরাতন কারাগারে মামলাটির বিচার সম্ভব হবে।
এদিকে বিষয়টিকে আইন পরিপন্থী বলেছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি জয়নুল আবেদীন এ প্রতিবেদককে বলেন, এ মামলায়ও রাজনৈতিকভাবে খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। দেশে অন্য অনেক মামলা থাকলেও সরকার খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে।
তিনি বলেন, অন্য সব মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন হয়ে গেছে। তাই এ মামলায় আটকে রাখতে ব্যস্ত সরকার। মূলত সরকার বেগম জিয়াকে ভয় পায়। তারা জানে খালেদা জিয়া মুক্ত হয়ে আন্দোলনের ডাক দিলে জনগণ ঝাপিয়ে পড়বে। তাই তাকে আটকে রাখার জন্য এসব করা হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
অন্যদিকে খালেদা জিয়ার অপর আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এরকম কখনো হয়নি। এটিই প্রথম কোন ঘটনা। জুডিশিয়াল সিস্টেমের বাইরে গিয়ে সরকার জোর করে এটি করছে। কারো মতামত ছাড়া কারাগারে বিচার করবে এটা সম্পূর্ণ অন্যায় এবং বেআইনি। এটাকে বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের সর্বশেষ নজীর বলে উল্লেখ করেন খালেদা জিয়ার এই আইনজীবী।