এশিয়া ছাড়িয়ে গোয়াদর বন্দরের সুফল দেখছে চীনের মিডিয়া
ফাতেমা আহমেদ: মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার বেশ কিছু দেশ চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোরের (সিপিইসি) সাথে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই প্রকল্পের ব্যাপারে তাদের আগ্রহ গোয়াদর বন্দরের সম্ভাবনাকে ফুটিয়ে তুলেছে। চায়না.ওআরজি.সিএন ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, দক্ষিণ পাকিস্তানে বিআরআই-এর ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পের অংশ গোয়াদরের গভীর সমুদ্র বন্দর মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা এবং মধ্য এশিয়াকে তাদের বাণিজ্য রুটগুলো আবারও চালুর সুযোগ করে দিচ্ছে। সাউথএশিয়ানমনিটর।
পাকিস্তানে সৌদি রাষ্ট্রদূত গত বছর পরিস্কারভাবে গোয়াদরের ব্যাপারে তার দেশের আগ্রহ ও সেখানে বিনিয়োগের কথা জানিয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্যের নেতৃস্থানীয় দেশ হিসেবে সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশকে চীনের বাজারে প্রবেশের জন্য গোয়াদর বন্দরের সাথে সংযুক্ত করতে পারে। আরব আমিরাতও এখানে উৎসাহব্যঞ্জক ভূমিকা রাখছে। কিছু মহল দুবাই ও গোয়াদরকে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তুলে ধরার যে চেষ্টা করছে, সেগুলোকে গুরুত্ব না দিয়ে আরব আমিরাত চলতি বছরের মার্চ থেকে গোয়াদরের মাধ্যমে সিপিইসির অধীনে বাণিজ্যিক জাহাজের পরিচালনা শুরু করেছে।
তেলসমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের সুবিধার জন্য গোয়াদর বন্দরের সাথে চীনের জিনজিয়াং পর্যন্ত অপরিশোধিত তেলের পাইপলাইন স্থাপনের বিষয়টিও পরিকল্পনাও রয়েছে। এই পাইপলাইন দিয়ে প্রতি দিন এক মিলিয়ন ব্যারেল পর্যন্ত তেল পরিবহন করা যাবে।
চীন যেহেতু তাদের তেলের চাহিদার প্রায় ৫০ শতাংশ মধ্যপ্রাচ্য থেকে আমদানি করে, সেক্ষেত্রে এই পাইপলাইন তাদের আমদানি রুট আরেকটি বাড়িয়ে দেবে। অন্যদিকে, মধ্যপ্রাচ্যের রফতানিকারকরাও বিকল্প এই রুটের মাধ্যমে আরও কম খরচে তেল রফতানি করতে পারবে। জিনজিয়াংই চীনের প্রথম অঞ্চল যেটার সাথে গোয়াদর রুটের মাধ্যমে সংযুক্ত হবে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার ব্যবসায়ীরা। এটা এখন বিআরআইয়ের বৃহত্তম বাণিজ্য রুট হয়ে উঠেছে।
স্বায়ত্বশাসিত জিনজিয়াংয়ের রাজধানী উরুমকির রেলস্টেশন থেকে ১৭টি রেললাইন এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের দিকে চলে গেছে। প্রতিদিন এই রেলস্টেশনে ৩৬০০ টন কার্গো মাল পরিবহন করে। পণ্য পরিবহনের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে উঠেছে এই স্টেশন।
চীন বিআরআইয়ের অধীনে তাদের প্রাচীন সিল্ক রোডকে পুনরুজ্জীবিত করার ঘোষণা দেয়ার পর তিনটি সভ্যতার কেন্দ্রে অবস্থিত এই শহরটি মনোযোগের কেন্দ্রে উঠে এসেছে। কার্যত, বিশ্বের অর্থনৈতিক নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে গোয়াদর। এই শহরের কৌশলগত অবস্থানে গড়ে ওঠা গভীর সমুদ্র বন্দর সিল্ক রুটকে সমৃদ্ধ করেছে বিশেষ করে তাদের জন্য যারা মধ্য সা¤্রাজ্যের সাথে যুক্ত হতে চায়। বিশ্ব বাণিজ্যের অগ্রগামী পক্ষগুলো – যারা পরবর্তী বৃহত্তম প্রকল্পের অপেক্ষায় রয়েছে, গোয়াদরই তাদের পরবর্তী গন্তব্য।