
এখনও চুক্তিতে চলছে বাস, দুর্ঘটনা ঘটছেই

মাসুদ আলম: চুক্তির বদলে দৈনিক বেতনে বাস চালানোর সিন্ধান্ত নিলেও তা কার্যকর হয়নি। রাজধানীর অধিকাংশ বাস এখনো চুক্তিতে বা ট্রিপ ভিত্তিতে চলছে। ফলে অতিরিক্ত লাভের আশায় বেপরোয়া বাস চালানো বন্ধ হয়নি এখনও। বৃহস্পতিবার সরজমিনে চালক ও যাত্রীদের সঙ্গে আলাপ করে জানাগেছে, এখনও অধিকাংশ বাস চলছে চুক্তিতে। এতে মানা হচ্ছে না সরকারি বা মালিক সমিতির নির্দেশনা।
প্রায় এক মাস আগে চুক্তিতে বাস না চালানোর ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। কিন্তু পরিবহন শ্রমিকরা বলেন, যেসব বাস সিটিং হিসেবে চলছে, কেবল সেগুলোর চালক-শ্রমিকরা ট্রিপ হিসেবে বেতন পাচ্ছেন। আর যেসব বাস লোকাল হিসেবে চলছে, সেগুলো আগের মতোই নির্ধারিত টাকা বা বাস মালিকের সঙ্গে অলিখিক চুক্তিভিত্তিতে চলছে। ফলে বন্ধ হচ্ছে না বেপরোয়া বাস চালানো। বন্ধ হচ্ছে না দূর্ঘটনা।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বেপরোয়া বাসের চাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। সেদিন থেকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে মালিক সমিতি ঘোষণা দেয়, ৯ আগস্ট থেকে চুক্তিতে গাড়ি চালানো হবে না। ফিটনেসবিহীন গাড়িও না চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় তারা। কোনো মালিক চালকের সঙ্গে চুক্তিতে গাড়ি চালালে ওই কোম্পানির সমিতির সদস্যপদ বাতিল করা হবে বলেও সেসময় জানান মালিক সমিতি। তবে সমিতির নেয়া সিন্ধান্তও মানছে না মালিক-চালক।
ফার্মগেট থেকে নতুনবাজার গামী ৬ নম্বর বাসের এক চালক বলেন, অতি লাভের আশায় চুক্তিতে বাস চালাতে চায় মালিকরা। এতে জমার টাকা, সড়কের বিভিন্ন চাঁদা, জ্বালানি খরচ সবই বহন করতে হয় চালকদের। চালক জানান, চুক্তিতে চালালে তাদের বেশি ট্রিপের তাড়া থাকে। প্রতিযোগিতা চলে কে আগে যাবে আর কে বেশি যাত্রী তুলবে। দৈনিক বেতনে হলে এসব চিন্তা থাকবেনা জানিয়ে তিনি বলেন, তখন স্বস্তিতে বাস চালাতে পারবে তারা।
অপরদিকে ভূক্তভোগী যাত্রীদের দাবি, রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ চুক্তিতে বাস চালানো। এতে চালকরা বেপরোয়া হয়ে উঠেন। চুক্তি বাস চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা গেলে দুর্ঘটনা অনেকটাই কমে আসবে বলেও মত দেন তারা।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ৮০ শতাংশ বাস বেতন ভিত্তিক চলে। ট্রিপ প্রতি চালকদের বেতন দেওয়া হচ্ছে। আর ২০ শতাংশ বাস চুক্তিতে চলছে। এগুলোও বেতনে আওতায় আনা হবে।
