আমার দেশ • প্রথম পাতা • মিনি কলাম • লিড ২
‘অন্য দেশের ব্যবহারের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম-মোংলা বন্দরের সক্ষমতার বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচ্য’
আশিক রহমান : ভারতের সেভেন সিস্টারে পণ্য আনা-নেওয়ার মতো সক্ষমতা চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের আপাতত নেই বলে মনে করেন এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিজ দেশের কাজ করে কুলিয়ে উঠতে পারছে না। জেটির অপ্রতুলতা, বার্থিং সুবিধায় ব্যাপক ট্রাফিক জ্যাম। অনেক লোড নিতে হয়। বস্তুত চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের বহির্বাাণিজ্যের ধকল সইতে হিমশিম খাচ্ছে, কন্টিনারের বিরাট জট পড়ে যায়। সম্প্রতি একজন বিদেশি বিশেষজ্ঞ এই বন্দরের ব্যবস্থাপনা বাইরের কাছে দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তাই সেখানে ভারতের মতো একটি বৃহৎ অর্থনীতির দেশকে যদি এ বন্দর ব্যবহার করতে দেওয়া হয় সেটা তো অসম্ভবের পর্যায়ে পড়ে যাওয়ার মতো। অবশ্য চট্টগ্রাম বন্দরের আশেপাশে গভীর সমুদ্র বন্দর উন্নয়নের যেসব অবকাঠামো গড়ে উঠছে তা ব্যবহারে (অন্য শক্তিধরের আগে) আগাম অবস্থান নেয়ার একটি দীর্ঘমেয়াদী দূরদর্শী পদক্ষেপও হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ভারতের সাত রাজ্যে বা সেভেন সিস্টারের পণ্য আনা-নেওয়ার কাজে চট্টগ্রাম বন্দর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ বন্দর ব্যবহার করে এই সাত রাজ্যে পণ্য আনা-নেওয়া ব্যয় সাশ্রয়ী তো বটে পক্ষান্তরে ওইসব রাজ্যে বাংলাদেশের পণ্য বাণিজ্য বিপণনের বিদ্যমান সুযোগ হবে আরও সীমিত। ফাইনানশিয়াল এক্সপ্রেসে দেখলাম বাংলাদেশ থেকে ভারতে ভোজ্য তেল আমদানির ক্ষেত্রে মোটা দাগের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ভারতে। ভারত কর্তৃক আমাদের বন্দর ব্যবহারের বিষয়টি একটি প্রলম্বিত ও প্রসারিত প্রেক্ষাপটে বিচার-বিশ্লেষণের অবকাশ রয়েছে। চট্টগ্রাম বা মোংলা বন্দরের সক্ষমতার বিষয়টিও সে নিরীখে দেখা দরকার । এটা ঠিক, মোংলা বন্দরের কিছু অংশ এখনো অব্যবহৃত অবস্থায় আছে। কয়েকটি নদীর মাধ্যমে মোংলা বন্দর ব্যবহার করতে আগ্রহী ভারত। প্রশ্ন হচ্ছে, নদীগুলোর অবস্থা কী, খোঁজ নেওয়া হয়েছে? এসব বিষয়ে পর্যালোচনার যথেষ্ট জায়গা আছে।
এক প্রশ্নের জবাবে ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, বন্দর ব্যবহারের জন্য যে ট্য্যারিফ নির্ধারণ করা হয়েছে বা হবে তা যথেষ্ট কৌশলী পর্যালোচনা বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিতে হবে। বন্ধুপ্রতিম ও প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বিনিয়োগ বিষয়ে নেগোশিয়েশনে পারস্পরিক সহযোগিতা ও স্বার্থ সংশ্লিষ্টতার প্রসঙ্গটি প্রাধান্য পাওয়া প্রয়োজন। একের বদান্যতার বিপরীতে অন্যের স্বার্থ উপেক্ষার উপলক্ষ্য যাতে তৈরি না হয় সেটা উভয় পক্ষকেই বিবেচনায় নিতে হবে। সবকিছু সঠিক পর্যালোচনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন হবে বলে এটা সকল পক্ষের প্রত্যাশা।