আমার দেশ • প্রথম পাতা • লিড ১
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ : গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি এখনই বাড়ছে না
শাহীন চৌধুরী : বহু জল্পনা কল্পনার পর অবশেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে গ্যাসের দাম আর বাড়ানো হচ্ছে না। আমাদের অর্থনীতি ও আমাদের সময় ডটকমকে বিষিয়টি নিশ্চিত করেছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। তিনি বলেন, গ্যাসের দাম আপাতত বাড়ছে না। কবে নাগাদ মূল্য বাড়বে এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সে বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা স্থগিত করেছে। তবে গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোর মার্জিন বাড়ানোর বা সমন্বয়ের বিষয়ে ঘোষণা দেওয়া হতে পারে এই সপ্তাহে। পাশাপাশি কিছু নতুন নিদের্শনাও দিতে পারে কমিশন।
বিইআরসি’র সদস্য আব্দুল আজিজ খান আমাদের অর্থনীতিকে বলেন, সহসাই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তিনি বলেন, শিগগিরই কমিশনের সভা করে আমরা বিস্তারিত জানাতে পারবো।
বিইআরসি সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে নির্বাচনের আগেও একদফা বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির চেষ্টা করে কমিশন। তখন বিদ্যুতের দাম না বাড়ানোর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচনের ঠিক আগে আবারও কমিশনের একই কাজে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল সূত্রটি দাবি করেছে।
উল্লখ্য, আবাসিক ও বাণিজ্যিক ছাড়া সব ধরনের গ্যাসের দামই বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল বিতরণ কোম্পানিগুলো। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এনএলজি) খরচ মেটাতেই গ্যাসের দাম বাড়ানোর এই প্রস্তাব দেওয়া হয়। জুনে তাদের প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি হয়। শুনানির পর ৯০ দিনের মধ্যে কমিশনের আদেশ দেওয়ার কথা। এই সপ্তাহেই এই ৯০ দিন পূর্ণ হচ্ছে।
গ্যাস সংকট মোকাবেলায় গত ১৮ আগস্ট থেকে এলএনজির সরবরাহ শুরু করা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে বলে গত ১৫ সেপ্টেম্বর জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বিইআরসির নানা সূত্র থেকে গ্যাসের দাম বাড়ানো নিয়ে নানা কথা শোনা যাচ্ছিল।
গত রোববার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনের সব প্রস্তুতি নেওয়ার পরও শেষ পর্যন্ত সংবাদ সম্মেলন স্থগিত করে কমিশন। কমিশনের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, নির্বাচনের আগে গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী রাজি হননি। গ্যাসের দাম বাড়ানোর ফলে সাধারণ মানুষের ওপর যে প্রভাব পড়বে সেসব বিষয় বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, যে পরিমাণ এলএনজি এই বছর যুক্ত হচ্ছে, তাতে সব মিলিয়ে সারা বছরে দুই হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হওয়ার কথা। ফলে পুরো বছরের অর্ধেক সময় ধরে হিসাব করলে ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়ায় এক হাজার কোটি টাকা। ইতোমধ্যে সরকার এখাতের সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করেছে। ফলে এলএনজি আমদানিতে পেট্রোবাংলাকে খুব বেশি ব্যয় করতে হবে না। এ কারণেই গ্যাসের দাম না বাড়িয়ে আপাতত ভর্তুকি দিয়ে ব্যয় মেটানোর চিন্তা করছে সরকার।