ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ভারসাম্যপূর্ণ নয় বলে মনে করেন ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন
আশিক রহমান : ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ভারসাম্যপূর্ণ হয়নি বলে মনে করেন শিক্ষাবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, যারা অংশীজন বা স্টেকহোল্ডারÑ সাংবাদিক-সম্পাদকদের মতামতের কিছুটা হলেও প্রতিফলন থাকা উচিত ছিল এই আইনে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সরকারের ইচ্ছাই চূড়ান্ত নয়, অংশীজনের মতামতের প্রতিফলনও কিছুটা থাকা দরকার। এ ক্ষেত্রে আইনটি ভারসাম্যপূর্ণ হয়নি, ভারসাম্যপূর্ণ রাখা উচিত ছিল । ভারসাম্যপূর্ণ হয়নি বলেই সারাবিশ্ব থেকে সমালোচিত হয়েছে এই আইন।
তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি যতদিন ক্ষমতায় থাকবেন সাংবাদিকদের ভয়ের কিছু নেই। যারা মিথ্যা ও গুজব ছড়াবেন না তাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু এমন কথা তো ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনকেও বলা হয়েছিল। আমরা জানি ’৭৪-এর বিশেষ ক্ষমতা আইন প্রয়োগের চেয়ে অপপ্রয়োগ বেশি হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনও অনেক বেশি অপপ্রয়োগের শঙ্কা থেকেই যায়। আমার মনে হয়, রাষ্ট্রপতির সম্মতির পরও সরকারের সুযোগ থাকে আইনটির আপত্তিকর ধারা নিয়ে নতুন করে বিবেচনা করার। সরকার সে কাজটি করলে ভালো করবে। কারণ সামনে নির্বাচন। নির্বাচনের আগে কোনো কারণে গণমাধ্যমকে ক্ষুব্ধ করলে ক্ষমতাসীনদের জন্য সুখকর কিছু বয়ে আনবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি প্রয়োজন ছিল। কিন্তু আইনটির ৯টি ধারা নিয়ে সম্পাদক পরিষদ উদ্বেগ জানিয়েছিল। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর ধারাটি হচ্ছে, বিনা পরোয়ানায় পুলিশ যে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারবে। এটা বিশেষ ক্ষমতা আইনে রয়েছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেও দেওয়া আমরা দেখেছি অতীতে এ ধরনের অপব্যবহার করা হয়েছে। ফলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পুলিশের এত ক্ষমতা থাকা নিয়ে নানাবিদ প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, খুব সম্প্রতি সরকারের তিনজন মন্ত্রী সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছিলেন। সেখানে তারা কথা দিয়েছিলেন, মন্ত্রিপরিষদে সম্পাদক পরিষদের আপত্তিগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। কিন্তু আমরা দেখলাম, আলোচনা ছাড়াই মহামান্য রাষ্ট্রপতি এই বিলে সম্মতি দিয়ে দিলেন। অর্থাৎ বিলটি আইনে পরিণত হলো। এতে আমার মনে হয়, তিনমন্ত্রী কথা রাখেননি বা রাখতে পারেননি।