নূর মাজিদ : আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা-আইইএ প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এমন আশঙ্কা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার প্যারিসভিত্তিক সংস্থাটি এই মাসিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘জ্বালানি তেলের উচ্চমূল্য নিয়ে আমাদের উদ্বেগ পরিষ্কার। কারণ আমরা বিশ্বাস করি এমন মূল্যবৃদ্ধি বৈশ্বিক অর্থনীতির বিকাশে অন্যতম প্রধান হুমকি।’ আইইএ জানায়, চলতি বছরে জ্বালানি তেলের মূল্য ২৫ শতাংশ বেড়েছে, এতে অনেক বিনিয়োগকারীর মাঝে এমন ধারণা তৈরি হয়েছে যে চলতি বছরের শেষেই জ্বালানি তেলের দর তিন অঙ্কের ঘর ছুঁয়ে ফেলবে। বর্তমানে বিশ্ববাজারে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজারদর প্রায় ৮০ ডলার।
ইতোপূর্বে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রা¤পও জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জন্য ওপেককে দায়ী করে এক বিবৃতি দেন। তবে বিশেষজ্ঞরা জানান, মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ, সংঘাত এবং ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন তেল রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদি ইস্যু বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে সরাসরি প্রভাব ফেলছে। আইইএ জানায়, শুধু অপরিশোধিত তেল নয় বরং বিশ্ববাজারে গ্যাস এবং কয়লার মূল্যবৃদ্ধিতেও তারা চিন্তিত। জালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সংস্থাটি আগামী দুই বছরের বৈশ্বিক জালানির অনুমিত চাহিদা তালিকা সংশোধন করেছে। সংশোধিত তালিকায় মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে আগামী দুই বছরে জালানির চাহিদা কমে আসবে বলেই আইইএ জানায়। এর মধ্যে ২০১৮ সালের শেষে জ্বালানি তেলের চাহিদা দৈনিক ১৩ লাখ ব্যারেল পর্যন্ত কমবে বলে জানানো হয়। একইসঙ্গে, ২০১৯ সালে জ্বালানি তেলের চাহিদা দৈনিক ১৪ লাখ ব্যারেল কমবে। সংস্থাটি আরও জানায়, বিশ্ব অর্থনীতি জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, বাণিজ্য যুদ্ধ এবং আঞ্চলিক সংঘাত গভীর অর্থনৈতিক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। এর মধ্যে জালানির মূল্যবৃদ্ধি বৈশ্বিক অর্থনীতির বিকাশ এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনৈতিক অগ্রগতি স্তিমিত করতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।
এদিকে গত মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ প্রকাশিত অপর এক প্রতিবেদনেও ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির সার্বিক সূচক শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমানো হয়েছে। যা মোট প্রবৃদ্ধি সূচকের চাইতে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ কম। সিএনবিসি