
ডায়ালাইসিসের কারণে মানসিক স্থিতি কম ছিলো সেনাপ্রধান সম্পর্কে ভুল তথ্য ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর দুঃখপ্রকাশ

শিহাবুল ইসলাম : সেনাপ্রধান জেনারেল এম এ আজিজ আহমেদকে নিয়ে টেলিভিশনের টক-শোতে ভুল তথ্য উপস্থাপনের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। শনিবার সকালে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী বা জেনারেল আজিজের সম্মানহানি করা আমার উদ্দেশ্য ছিল না এবং এরূপ কোনো অভিপ্রায়ও আমার নেই।’
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘‘দেশে অঙ্গ প্রতিস্থাপন আইনের সংকীর্ণতার কারণে আমার বিকল কিডনী রোগের উত্তম চিকিৎসা ও সুলভে কিডনী প্রতিস্থাপন সম্ভব নয়। তাই জীবনরক্ষার জন্যে আমাকে প্রতি সপ্তাহে তিন দিন হোমাডায়ালাইসিস করাতে হয়। ডায়ালাইসিসের পর স্বাভাবিক কারণে শারীরিক দুর্বলতা বাড়ে এবং মানসিক স্থিতি কিছুটা কমে। সময় টেলিভিশনের বিশেষ অনুরোধে শারীরিক দুর্বলতা নিয়েই আমি গত ৯ অক্টোবর রাত ১০ টায় তাদের একটি টক-শোতে অংশ নেই। এতে অপর অতিথিরা ছিলেন সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান এবং আওয়ামী লীগের প্রাক্তন প্রেসিডিয়াম সদস্য নূহ আলম লেলিন। টক-শোতে আলোচনাকালে আমি দেশের বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল এম এ আজিজ সম্পর্কে অসাবধানতাবশত: একটি ভুল তথ্য উল্লেখ করেছিলাম। জেনারেল আজিজ একজন দক্ষ আর্টিলারী সেনা কর্মকর্তা। তিনি চট্টগ্রাম সেনানিবাসের ‘জিওসি’ ছিলেন না, ‘কমান্ডেন্ট’ও ছিলেন না। তিনি তার কর্মজীবনের এক সময়ে চট্টগ্রাম সেনাছাউনীতে আর্টিলারী প্রশিক্ষক ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ‘কোর্ট মার্শাল’ হয়নি, একবার ‘কোর্ট অব এনকোয়ারী’ হয়েছিলো। এরকম ভুল বক্তব্য ও শব্দ বিভ্রাটের জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত ও মর্মাহত।’’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সেনাবাহিনীর গৌরবে আমি গর্বিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা ও সৈনিকদের সঙ্গে কালাতিপাত করেছি। তাদের সুখ-দুঃখের ভাগিদার হয়েছি এবং যুদ্ধশেষে আমিই প্রথম কুমিল্লা কম্বাইন্ড মিলিটারি হাসপাতাল চালু করি। পরে আমি ও ডা. আজিজুর রহমান ঢাকা কম্বাইন্ড মিলিটারি হাসপাতাল চালু করি।’
লিখিত বক্তব্যে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আরো বলেন, ‘জেনারেল আজিজের সম্মানহানি করার কোনো চিন্তা বা উদ্দেশ্য আমার ছিল না। আমি খোলা মনে আরো বলেছিলাম, তার ছোটভাই শীর্ষ সন্ত্রাসী জোসেফের দায়-দায়িত্ব জেনারেল আজিজের ওপর বর্তায় না। জেনারেল আজিজকে আমি অসাবধানতাবশত কোনো মনোকষ্ট দিয়ে থাকলে সেজন্য আমি পুনরায় আন্তরিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করছি।
সময় টেলিভিশনের টক-শোতে ডা. জাফরুল্লাহ বলেছিলেন, ‘দেখেন, আর্জেস গ্রেনেড… আমি জানি না সময়টি মিলে কিনা, আমাদের বর্তমান চিফ অব আর্মি আজিজ সাহেব চট্টগ্রামের কমান্ডার ছিলেন, জিওসি ছিলেন, কমান্ডেন্ট ছিলেন। তার ওখান থেকে একটা ব্যাপক সংখ্যক সমরাস্ত্র-গোলাগুলি চুরি হয়েছিলো। হারিয়ে গেছিলো, বিক্রি হয়ে গেছিলো এবং এ জন্য একটা কোর্ট মার্শালও হয়েছিল, আজিজের নামে। জেনারেল আজিজের নামে কোর্ট মার্শালও হয়েছিল…।’
এ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানায় সেনা সদর দফতর। এতে ডা. জাফরুল্লাহর সেই মন্তব্যকে দায়িত্বজ্ঞানহীন, অসত্য ও সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে অভিহিত করা হয়। তার নামে মামলা করবে সেনাবাহিনী, এমন খবরও শোনা যাচ্ছিলো। এর প্রেক্ষিতেই সংবাদ সম্মেলন করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সম্পাদনা : মাহবুব আলম, সালেহ্ বিপ্লব
