আমার দেশ • প্রথম পাতা • লিড ৩
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ১১ প্রতিষ্ঠান বছরে ৫০০ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছে
আবু বকর : প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ১১টি প্রতিষ্ঠান বছরে ৫০০ কোটি টাকার বেশি ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছে। এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাদের পাঁচ বছরের ভ্যাট প্রদানের বিষয়ে তদন্ত করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর ভ্যাট নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। গতকাল প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের নিকট বাৎসরিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর। এর আগে প্রতিষ্ঠান সমুহের লেনদেনের বিস্তারিত তথ্য জানানোর জন্য বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে তলবী পত্র পাঠানো হয়েছে।
ভ্যাট নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর সূত্র জানিয়েছে, প্রাণ ফুডস লি., বঙ্গ বিল্ডিং ম্যাটেরিয়াল লি., রংপুর ফাউন্ড্রি লি., রংপুর মেটাল ইন্ড্রাস্ট্রিজ লি. (ট্রেডিং ইউনিট), রংপুর মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লি. (ইফনিট ২), রংপুর মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লি. (ইফনিট ৩), রংপুর মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লি. (কাঁচপুর ইউনিট), রংপুর মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লি. (ভুলতা ১ ইউনিট), রংপুর মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লি. (ভুলতা ২ ইউনিট), প্রাণ আরএফএল প্লস্টিক লি. এবং প্রাণ-আরএফএল এক্সপোর্ট লি. প্রতিষ্ঠান সমূহের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চাওয়া হয়।
ভ্যাট গোয়েন্দা সূত্র জানায়, এনবিআরের সিলেট কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের নিরীক্ষায় গত বছর প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান রংপুর মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজের প্রায় ৪০ কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকির তথ্য বেরিয়ে আসে। কাঁচামাল আমদানির তথ্য গোপন, অনুমোদন ছাড়া রফতানি ও অবৈধভাবে রেয়াত নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি ওই কর ফাঁকি দেয়। অভিযোগ রয়েছে, এভাবে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিভিন্ন অঙ্গপ্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে।
ভ্যাট গোয়েন্দা সূত্র জানায়, হবিগঞ্জের ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে রয়েছে গ্রুপটির রংপুর মেটালের কারখানা। এখানে দুটি ইউনিটে বাইসাইকেল, টায়ার, রিম, স্পোক, ক্যাবলওয়্যার, এমএস পাইপ, জিআই পাইপ ও টিউব তৈরি করা হয়। এর মধ্যে একটি ইউনিটের বন্ড লাইসেন্স নেয়া আছে, অন্য ইউনিটের নেই। অথচ দুটি ইউনিট পণ্য উৎপাদনে একই কাঁচামাল ব্যবহার করে। রাজস্ব কর্মকর্তারা বিস্মিত হন, ইউনিট দুটোর আলাদা ব্যবসা নিবন্ধন নম্বর (বিআইএন) থাকলেও আয়কর অফিসে ইউনিট দুটোর টিআইএন একটিই, যা কোনোভাবে হওয়ার সুযোগ নেই। সমজাতীয় পণ্য উৎপাদনকারী দুটি ইউনিট পাশাপাশি হওয়ায় রাজস্ব ফাঁকির আশঙ্কা করেন তারা। সূত্র জানায়, নিরীক্ষার জন্য তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে রংপুর মেটালকে ৯ বার চিঠি দেয়া হলেও প্রতিষ্ঠানটি তদন্ত দলকে সহযোগিতা করেনি। পরে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড (কাস্টমসের ডাটাবেজ সফটওয়্যার) থেকে আমদানি তথ্য ও কর অব্জল ৬ চিঠির মাধ্যমে বার্ষিক অডিট রিপোর্ট ও আয়কর রিটার্ন থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিরীক্ষা করা হয়।
সম্পাদনা : বিশ^জিৎ দত্ত/রেজাউল আহসান