নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে তদন্ত নিয়ে আলোচনার দাবি ৯ সদস্যের
সাউথএশিয়ান মনিটর : মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনীর অভিযান বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদে জাতিসংঘ তদন্ত টিমের বক্তব্য তুলে ধরা হবে। তদন্ত টিমের বক্তব্য নিরাপত্তা পরিষদে তুলে ধরার আবেদন করেছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও ব্রিটেনসহ ৯টি সদস্য দেশ।
তাই চীন ও রাশিয়ার বিপরীত অবস্থান থাকলেও নিরাপত্তা পরিষদে তদন্ত টিমের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেয়া হবে। এই তদন্ত টিমই রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর কর্মকা-কে গণহত্যার শামিল বলে অভিহিত করেছে।
গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৭ লাখেরও বেশি মানুষ। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এ ঘটনায় খুঁজে পেয়েছে মানবতাবিরোধী অপরাধের আলামত।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এ ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ আখ্যা দিয়েছে। রোহিঙ্গা নিধনকে গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করেছে জাতিসংঘ। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বিষয়টির বিস্তারিত তুলে ধরা হলে দেশটির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। কূটনীতিকরা বলছেন, নিরাপত্তা পরিষদের ভেটো ক্ষমতার মালিক চীন ও রাশিয়া মিয়ানমারের বিরুদ্ধে যে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া ঠেকাবে। তবে তারা নিরাপত্তা পরিষদের এই উদ্যোগ ঠেকাতে পারেননি।
কারণ ১৫ সদস্যের জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ন্যূনতম ৯ সদস্য এই প্রস্তাবটি সমর্থন করেছে। তাই বিষয়টিতে ভেটো দেয়া যাবে না। কূটনীতিকরা বলেছেন, চীন ও রাশিয়া মনে করে, এই প্রতিবেদন প্রথমে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের থার্ড কমিটির কাছে পাঠানো উচিত।
ওই কমিটি মানবাধিকার বিষয়ে কাজ করে থাকে। তবে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, পোল্যান্ড, পেরু, কুয়েত, আইভরিকোস্ট ও যুক্তরাষ্ট্র মিলে এক চিঠিতে এই আবেদন জানায়। ফলে এখন তদন্ত দলের প্রধান নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনা করতে পারবেন।
জাতিসংঘ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকায় মিয়ানমার সেনা কর্মকর্তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সেনাবাহিনীর সঙ্গে বেসামরিক কর্তৃপক্ষও এই নিধনযজ্ঞে ইন্ধন জুগিয়েছে। রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চিও তার সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে এই সহিংসতা থামাতে ব্যর্থ হয়েছেন। রাখাইনে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ নিয়ে মিয়ানমার সরকারের প্রত্যাখ্যান ও অস্বীকারের মাত্রায় তারা অবাক হয়েছেন। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ