মোট ফ্ল্যাট ৮ হাজার ৭৩৬টি, নির্মার্তা প্রতিষ্ঠান ‘রেডটেন ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড’ ৫ হাজার ৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০৪টি অ্যাপার্টমেন্ট ভবন নির্মাণে সহায়তা করবে মালয়েশিয়া সরকার
সোহেল রহমান : মধ্যম ও নি¤œ আয়ের মানুষের জন্য রাজধানীর উত্তরার ১০৪টি এ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ করবে রাজউক। ৫ হাজার ৯৮ কোটি টাকায় ১৮নং সেক্টরে বাস্তবায়নাধীন এ প্রকল্পে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দেবে মালয়েশিয়া সরকার। বেসমেন্টসহ ১৬তলা বিশিষ্ট এসব এ্যাপার্টমেন্ট ভবন নির্মাণে আধুনিক ‘ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজড বিল্ডিং সিস্টেম’ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। ‘ডিজাইন-বিল্ড-ট্রান্সফার’ পদ্ধতিতে মালয়েশিয়ার প্রতিষ্ঠান ‘রেডটেন ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড’ এই ভবনগুলো নির্মাণ করবে।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর ‘উত্তরা এপার্টমেন্ট প্রকল্প’-এর ‘বি’ ও ‘সি’ ব্লকে এসব ভবন নির্মাণ করা হবে। মোট ফ্ল্যাটের সংখ্যা হচ্ছে ৮ হাজার ৭৩৬টি। এর মধ্যে ‘বি’ ব্লকের ৫২টি ভবনের ৪ হাজার ৩৬৮টি ফ্ল্যাটের প্রতিটির আয়তন হচ্ছে ১ হাজার ২৫০ বর্গফুট এবং ‘সি’ ব্লকের অবশিষ্ট ৫২টি ভবনের ৪ হাজার ৩৬৮টি ফ্ল্যাটের প্রতিটির আয়তন হচ্ছে ৮৫০ কর্গফুট। বীম ও কলাম বিশিষ্ট স্ট্রাকচারের পরিবর্তে আধুনিক ‘ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজড বিল্ডিং সিস্টেম’ প্রযুক্তিতে এ্যালুমিনিয়াম শাটার ব্যবহারের মাধ্যমে এসব ভবন নির্মাণ করা হবে। ফলে ভবন নির্মাণের সময় কম লাগবে। ভবন নির্মাণের এ পদ্ধতিতে বুয়েট-এর বিশেষজ্ঞদের সম্মতি রয়েছে। প্রতি বর্গফুট ৩ হাজার ৪৩৫ টাকা দরে সর্বমোট ১ কোটি ৪৮ লাখ ৪১ হাজার ২৭৩ বর্গফুট এরিয়া নির্মাণে মোট ব্যয় হবে ৫ হাজার ৯৮ কোটি টাকা।
জানা যায়, জি-টু-জি-এর আওতায় মালয়েশিয়া সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ‘বি’ ও ‘সি’ ব্লকের ভবনসমূহ নির্মাণে মালয়েশিয়া সরকারের ‘স্পেশাল এনভয় টু ই-িয়া অ্যান্ড সাউথ এশিয়া অন ইনফ্রাস্ট্রাকচার’-এর আওতায় ২০১১ সালে সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রথমবার সমঝোতা স্মারক সই করা হয়। এরপর দ্বিতীয়বার সংশোধিত সমঝোতা স্মারক সই করা হয় ২০১৪ সালে। প্রথমবার সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার পর সে দেশের দুটি কোম্পানিকে যৌথভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য নিয়োগ দিয়েছিল মালয়েশিয়া সরকার। কোম্পানি দুটি হচ্ছেÑ ‘জেমিল্যাং ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এসডিএন বারহাদ’ ও ‘এএলএম বিল্ডার্স এসডিএন বারহাদ’। কিন্তু প্রায় ৭ বছর পর চলতি বছরের গত ৪ জানুয়ারি ওই দুই কোম্পানিকে প্রকল্প বাস্তবায়নে অযোগ্য উল্লেখ করে ‘রেডটেন ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড’-কে নিয়োগ দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার।
চুক্তি অনুযায়ী. মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে প্রকল্প বাস্তবায়নকালে নির্মিত আনুষঙ্গিক স্থাপনাসমূহ মূল নির্মাণ কাজের হিসাবের অন্তর্ভূক্ত হবে না। প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ শেষ হওয়ার পর চার কিস্তিতে ৪২ মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ চুক্তিমূল্য পরিশোধ করতে হবে। সে মোতাবেক ৩০, ৩৮, ৪০ ও ৪২তম মাসে অর্থ পরিশোধ করা হবে বলে জানা গেছে। এছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়নকালে কাস্টম ডিউটি, ভ্যাট ও অগ্রিম আয়কর ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রচলিত বিধান কার্যকর হবে।
এদিকে প্রকল্পের চুক্তিমুল্য পরিশোধে আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনায় সরকারের কাছে ৩ হাজার কোটি টাকা অনুদান বা থোক বরাদ্দ কিংবা কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে স্বল্প সুদে দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ চেয়েছে রাজউক। কিন্তু এ বিষয়ে সরকার এখনো কোন সিদ্ধান্ত দেয়নি। সম্পাদনা : হুমায়ূন কবীর খোকন ও সালেহ্ বিপ্লব