জনগণকে সেবা দেয়া আপনাদের দায়িত্ব
হুমায়ুন কবির খোকন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে আমরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। কাজেই আমরা আশা করবো আপনারা চিকিৎসা সেবাটাকে আপনাদের কেবল পেশা হিসেবে নয় মহান দায়িত্ব হিসবে গ্রহণ করবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণকে সেবা দেয়াটা আপনাদের দায়িত্ব। পাশাপাশি এগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে, পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কারণ এগুলো নির্মাণে সরকারকে অনেক কষ্ট করে বাজেট বরাদ্দ করতে হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার সকালে রাজধানীর মহাখালীস্থ বক্ষব্যাধি হাসপাতাল প্রাঙ্গণে শেখ রাসেল গ্যাস্টোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল ভবন উদ্বোধন এবং আরো কয়েকটি স্বাস্থ্যসেবা প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপনকালে প্রদত্ত ভাষণে একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী সকল সরকারি হাসপাতালের যথাযথ রক্ষনাবেক্ষণের পাশাপাশি আগত রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। জাতির পিতার ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের অংশ বিশেষ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালিকে আর কেউ দাবায়ে রাখতে পারবেনা এবং তাদের ভাগ্য নিয়ে কেউ ছিনিমিনিও খেলতে পারবেনা।
অনুষ্ঠান থেকে প্রধানমন্ত্রী-ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন এন্ড রেফারেল সেন্টার এ্যাট শের-ই-বাংলা নগর এর উদ্বোধন এবং বিএমআরসি ভবন মহাখালী, ঢাকা’র উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ, শের-ই- বাংলা নগর এর ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দি হাসাপাতাল শের-ই- বাংলা নগর-এর ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজ, কিডনী ডিজিজেজ এন্ড ইউরোলজি হাসপাতাল শের-ই- বাংলা নগরের সম্প্রসারণ কাজ, ৫শ বেড হাসপাতাল মুগদার সার্ভিস ব্লকের সম্প্রসারণ, নার্সিং এন্ড মিডওয়াফারি ভবন মহাখালী, অ্যাজমা সেন্টার মহাখালী’র সম্প্রসারণ এবং কনস্ট্রাকশন অব হেলথ ম্যানেজমমেন্ট, সাভার-এর ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন।
যেসব প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন হয়েছে সেগুলোর নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে গেছে এবং এগুলোর কাজ সম্পন্ন হলে আমাদের স্বাস্থ্যসেবার ভিত্তিটা আরো মজবুত হবে, উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার অনেক কষ্ট করেই আজকের এই বাজেট বৃদ্ধি করেছে। ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যয় করে এক একটা পরিকল্পনা পাস করছে, কাজেই এই তৈরী করা স্থাপনাগুলো যেন গুণে ও মানে অটুট থাকে। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালিক, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক সিরাজুল ইসলাম শিশির এবং স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব সিরাজুল ইসলাম খান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
প্রবাসী বাংলাদেশি চিকিৎসকদের দেশের জন্য কাজ করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দেশে এখন চিকিৎসা সেবা দেওয়া থেকে শুরু করে গবেষণা, ক্লাস নেওয়াসহ বিভিন্নভাবে অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে।
গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের রোগের ধরন, স্বাস্থ্য সেবার উন্নতি, রোগ নির্ণয় এবং এর সমাধানে কাজ করতে হবে।
উল্লেখ্য, শেখ রাসেল গ্যাস্টোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে দেশে পরিপাকতন্ত্র, লিভার ও প্যানক্রিয়াসজনিত গ্যাস্ট্রো ইন্টেসটাইনাল রোগের উন্নত মানের চিকিৎসাসেবা পাওয়ার সুযোগ তৈরি হলো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা, রাজশাহী ও সিলেটে তিনটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দিয়েছি। সামনে নির্বাচন আবার যদি ক্ষমতায় আসতে পারি তাহলে প্রত্যেক বিভাগে একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে বাকী বিভাগগুলোতেও করে দেব।
একটি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সরকারের ধারবাহিকতা রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতার কারণে আমরা যেমন দেশের উন্নয়ন করেছি, তেমনি বহি:বিশ্বে ও বাংলাদেশের মান মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিদেশি অনেক রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান তাকে প্রশ্ন করে জানতে চান- কীভাবে বাংলাদেশের এত উন্নয়ন হয়েছে, ম্যাজিকটা কী? তিনি বলেন, উত্তরে তার একটাই কথা, ম্যাজিক কিছুই না, সবটাই হচ্ছে আন্তরিকতা এবং কর্মনিষ্ঠা। মানুষের জন্য কিছু করার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা।
তিনি বলেন, আমার তো চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। দিনরাত কাজ করি শুধু জনগণের জন্য। বঙ্গবন্ধু যে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছি।
প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, জনগণ যদি আবার ভোট দিয়ে তাকে ক্ষমতায় আনে তাহলে যেসব কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত সেগুলোর কাজ দ্রুত শেষ করে উদ্বোধনের ব্যবস্থা করবেন তিনি। সম্পাদনা : মাহবুব আলম