আক্তারুজ্জামান : তাইজুলের হাত ধরে দ্বিতীয় দিনের শুরুতে যে হাসিটা শুরু হয়েছিল সেটা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারেনি টাইগাররা। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় দিন পার হয়েছে হতাশায়। সিলেটের অভিষিক্ত টেস্টে বড় লজ্জার সামনেই দাঁড়িয়ে আছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ের ২৮২ রানের জবাবে টাইগাররা গুটিয়ে গেছে মাত্র ১৪৩ রানে। ১৩৯ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসের শেষ বেলায় ২ ওভারে ১ রান যোগ করেছে জিম্বাবুয়ে। ফলে দ্বিতীয় দিন শেষে ১৪০ রানে এগিয়ে আছে সফরকারীরা।
সিলেট টেস্টে নিজেদের প্রথম ইনিংসে একেবারেই চেনা রূপে দেখা যায়নি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজে রেকর্ডবুক নাড়িয়ে দেয়া ইমরুল কায়েসের ব্যাট এতটুকুও চওড়া হয়নি। রানের ফোয়ারা ছোঁটেনি ঘরোয়া ক্রিকেটে কিছুদিন আগেই দ্রুততম দ্বিশতক করা লিটনের ব্যাটেও। আর ‘টেস্ট ব্যাটসম্যান’ নামে পরিচিত মুমিনুল হক নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা শান্তও কিছু করে দেখাতে পারেনি। আর অধিনায়কের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে মাঠে মাহমুদউল্লাহ তো রানের খাতায় খুলতে পারেননি।
তবে মুশফিকুর ও আরিফুল হক ছিলেন অন্যদের চেয়ে আলাদা। দলের রান বাড়াতে দাঁতে দাঁত চেপে উইকেটে থাকতে চেয়েছিলেন। তবে মুশফিক ফিরে যান ছোট্ট দুটি জুটি গড়ে। মুমিনুলের সঙ্গে ৩০ এবং আরিফুলের সঙ্গে ২৯ রানের পার্টনারশিপের পর ব্যক্তিগত ৩১ রানে ফিরে যান। অভিষিক্ত আরিফুল করেন দলীয় সর্বোচ্চ ৪১* রান। মুশফিককে সঙ্গ দেওয়ার পর মিরাজের সঙ্গেও ৩০ রানের জুটি। এরপর তাইজুলকে নিয়ে ২৩ ও অপুকে নিয়ে ১২ রান করে দলকে ১৪৩ রানের সংগ্রহ এনে দেন।
ঘরের মাঠে স্পিনার দিয়ে সফরকারীদের কাবু করাতে পারলেও নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে পারেনি টাইগাররা। স্পিন বলে খেলার ফলে পেসারদের মোকাবেলা করতে যেয়ে মুশফিকদের যে নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে তা ইনিংসের শুরুতেই বোঝা গেছে। তেন্ডাই চাতারাকে একেবারেই মোকাবেলা পারেনি টাইগাররা। স্কোরবোর্ডে ১৯ রান তুলতেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যায় চারজন টপঅর্ডার। ফলে ইনিংস থেকে ছিটকে যায় স্বাগতিকরা। বল হাত জিম্বাবুয়ের চাতারা ও সিকান্দার রাজা তিনটি করে উইকেট নেন। এছাড়া জার্ভিস দুটি ও উইলিয়ামস একটি উইকেট নেন।
এর আগে ২৩৬/৫ রানে প্রথম দিন পার করা জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় দিনে ৪৬ রান যোগ করতেই ইনিংস গুটিয়ে যায়। জিম্বাবুয়ের হয়ে তিনজন অর্ধশতকের দেখা পান। মাসাকাদজা ৫২, উইলিয়ামস ৮৮ এবং পিটার মুর ৬৩* রান করেন। বাংলাদেশের হয়ে অনেকদিন পর ইনিংসে পাঁচ বা তার বেশি উইকেট শিকার করা তাইজুল ইসলাম ৮২ রানে ৬টি উইকেট শিকার করেন। অপু দুটি এবং রাহী ও রিয়াদ একটি করে উইকেট নেন। আজ তৃতীয় দিনে সফলতা পেতে দ্রুত উইকেট শিকারের বিকল্প আর কোনো রাস্তা নেই টাইগারদের।