২০৩০’র মধ্যে বাংলাদেশকে অনুসরণ করে ক্ষুধা নির্মূল সম্ভব
আসিফুজ্জামান পৃথিল : এটা পরিস্কারভাবে বলা যায়, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ^জুড়ে ক্ষুধাকে নির্মূল করার জন্য আমরা জাতিসংঘের টেকসই লক্ষমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হবার পথেই রয়েছি। তবে এখনও ক্ষুধাকে হারিয়ে দেওয়া সম্ভব। বিশে^ এজন্য ভালো উদাহরণও রয়েছে। এক্ষেত্রে সারা বিশে^ বাংলাদেশের রোল মডেল হতে পারে বাংলাদেশ। গবেষণা প্রতিষ্ঠান থম্পসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন তাদের এক নিবন্ধে এ তথ জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘের নেওয়া উদ্যোগের শুরুর দিকে বিশ^জুড়ে দ্রুততম গতিতে ক্ষুধাকে হারিয়ে দেওয়ার যুদ্ধে নেমেছিলো বিশে^র প্রায় সকল দেশ। কিন্তু নানাবিধ কারণে ইদানিংকালে কমে গেছে এর গতি। কিছুকিছু এলাকায় আবার এর গতি বিপরীত দিকেও চলে গিয়েছে। এর পেছনের একটি কারণ হলে জলবায়ু পরিবর্তন। জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্যানেলের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ীবিশ^জুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনে অনেক এলাকাতেই কমে গেছে ফসলের উৎপাদন। ফলে বেড়ে গেছে ক্ষুধা। ক্ষুধার তাড়নায় এসব এলাকায় বাড়ছে অপরাধ প্রবণতাও। তবুও, ২০৩০ সালের মধ্যেই ক্ষুধাকে নির্মুল করা সম্ভব। শুধুমাত্র আমাদের নিজেদের অগ্রগতির গতি বৃদ্ধি করতে হবে।
এক্ষেত্রে বাংলাদেশের চেয়ে ভালো উদাহরণ আর হতে পারে না। দেশটি গত কয়েকদশকে নিজেদের অপুষ্টি কমাতে অভিনব সব উদ্যোগ নিয়েছে। ১৯৯০ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত ২৬ বছরে দেশটি পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুততার সঙ্গে কমিয়েছে অপুষ্টির হার। এসময়ে দেশটিতে অপুষ্টি এবং শিশুমৃত্যুহার অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ তাদের নীতিমালা তৈরী করেছে নিজেদের অর্থনৈতিক অবস্থা মাথায় রেখেই। নিজেদের সামর্থ্যকে শতভাগ কাজে লাগিয়ে দেশটি আজ ক্ষুধা এবং অপুষ্টির বিরুদ্ধে জয়লাভের প্রায় সন্নিকটে এসে দাঁড়িয়েছে।
প্রথমত, বাংলাদেশ তাঁদের খাদ্য উৎপাদন বাড়িয়েছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীন হবার পর থেকে দেশটির খাদ্য শস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে অন্তত ৩ গুন! এদিকে দ্বিগুনেরও বেশি হয়েছে জনসংখ্যা। কমেছে আবাদী জমির পরিমান। তবে এক্ষেত্রে সরকারের যেমন সাফল্য রয়েছে। তেমনি সাফল্য রয়েছে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদেরও। চীন, রুয়ান্ডা, ব্রাজিল এবং ভিয়েতনামেরও সাফল্য থাকলেও তা বাংলাদেশের মতো নয়।
বিশ^কে ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে অবশ্যই কৃষিক্ষেত্রে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে হবে। প্রয়োজনে বাংলাদেশের মতো উচ্চভিলাসী প্রকল্প ত্যাগ করে তৃণমূলে নজর দিতে হবে। একমাত্র এভাবেই ক্ষুধার বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়লাভ করা সম্ভব। সম্পাদনা : ইকবাল খান