আরিফুর রহমান : ডলার সঙ্কট মেটাতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু তাতে ডলারের দাম ও সঙ্কট কোনোটাই কমেনি। উল্টো বাজারে ডলার বিক্রি করায় এবং বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) অর্থ পরিশোধ করতে গিয়ে ১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রিজার্ভ কমেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, গত ৭ নভেম্বরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩২ দশমিক ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ১৪ নভেম্বর তা কমে দাঁড়িয়েছিলো ৩১ দশমিক ০১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। আর চলতি সপ্তাহেও তা ৩১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে অবস্থান করছে। এ সময়ে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি পরিমাণ রিজার্ভ কমেছে। গতকাল বুধবার পর্যন্ত প্রতি ডলার বিক্রি হচ্ছে ৮৩ টাকা ৯০ পয়সা দারে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে প্রতি ডলারের দাম যেখানে ৮১ টাকা ২৯ পয়সা ছিলো বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৮৩ টাকা ৯০ পয়সা। আর গত দুই মাসে বৃদ্ধি পেয়েছে প্রতি ডলারে ১৫ পয়সা। এর ফলে বাজারে তীব্র ডলার সঙ্কট তৈরি হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক এখন পর্যন্ত প্রায় ৬৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিক্রি করেছে। যার বাংলাদেশি টাকার পরিমাণ প্রায় ৫ হাজার ৩৪৪ কোটি।
সূত্র জানায়, একদিকে যখন ডলারের ঘাটতি দেখা দিয়েছে ঠিক তখনই বেড়েছে জ্বালানি আমদানি। গত বছরের এই সময়ের তুলনায় পণ্যটির আমদানি বেড়েছে প্রায় ৭২ শতাংশ। ফলে এই খাতে বিশাল পরিমাণ ডলার বিনিময় করতে হয়েছে কন্দ্রীয় ব্যাংককে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, নির্বাচনী বছরে বাণিজ্য ঘাটতি থাকলেও আগের বছরের তুলনায় বর্তমানে আমদানি কিছুটা কম রয়েছে। ডলারের এমন সঙ্কটের বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে দেখছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মির্জ্জা এবি আজিজুল ইসলামের মতে, বাজারে ডলার ছাড়লে তার প্রভার রিজার্ভের উপর পড়বেই। দেখতে হবে নির্বাচন সামনে রেখে অর্থ পাচার হচ্ছে কীনা। তা হলে দোষীদের খুঁজে বের করে দিতে হবে। অন্যথায় বৈদেশিক মুদ্রা আরো সঙ্কটে পড়বে। রেমিটেন্স আহরণ বৃদ্ধির দিকে জোর দেয়ারও তাগিদ দেন তিনি। সম্পাদনা: সোহেল রহমান