এ. আর. ফারুকী : ব্রিটেন ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে ১২ লাখ কোটি ডলারের সম্পদ চুরি করে নিয়ে গেছে। ১৭৬৫ থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত ১৭৩ বছরে ব্রিটেন এ পরিমাণ অর্থ নিজ দেশে পাচার করেছে। কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত এক নিবন্ধে ভারতের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ উৎস পাটনায়েক এসব তথ্য প্রকাশ করেছেন। স্কট. নেট
উৎস বলেন, ব্রিটেন ভারতীয় উপমহাদেশ শাসন করেছে প্রায় ২০০ বছর ধরে। এই সময়ে তারা এই অঞ্চলের মানুষকে দারিদ্র্য এবং দূর্ভিক্ষের মধ্যে রেখে শোষণ করে নিয়ে গেছে কয়েক লাখ কোটি ডলারের সম্পদ। যার ফলে একসময়ের সুজলা সুফলা অঞ্চলটি চরম দারিদ্র্য এবং দূর্ভিক্ষের শিকার হয়।
উৎস পাটনায়েক এই গবেষণায় ভারতের তৎকালীন বাণিজ্য উদ্বৃত্তকে হিসাবে নিয়ে এবং তার সাথে ৫ শতাংশ সুদের হার বিবেচনায় এনে এই হিসাব করেছেন। এক সাক্ষাতকারে উৎস পাটনায়েক বলেন, ওই সময়ে ভারতীয়রা তাদের প্রাপ্য অর্থ কখনোই পায়নি বরং সেই অর্থ ব্রিটেনের জনগনের ভরণপোষণে ব্যায় করা হয়েছে।
১৯০০ সাল থেকে ১৯৪৫-৪৬ সালে ভারতের মাথাপিছু আয় প্রায় স্থবির হয়ে গিয়েছিলো। ১৯০০-০২ সালে ভারতীয়দের মাথাপিছু আয় ১৯৬.১ রুপি অথচ তার ৪৫ বছর পরে ১৯৪৫-৪৬ সালে তাদের মাথাপিছু আয় ছিলো মাত্র ২০১.৯ রুপি। সেসময় ভারত বিশ্বের দুই নম্বর বাণিজ্য উদ্বৃত্তির দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলো। উৎস বলেন, সেসময় যুক্তরাজ্য প্রতিবছর ভারত থেকে তাদের বাজেটের ২৬-৩৬ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ পাচার করে নিয়ে যেতো। তার মতে, যদি সেময়ের বৈদেশিক আয় ভারতেই থেকে যেতো তবে ভারতের অর্থনীতি আরো সামনে এগিয়ে যেতে পারতো।
প্রবন্ধটিতে উৎস আরো বলেন, সেসময় মানুষ অপুষ্টিসহ কলেরার মতো নানা রোগে ¯্রফে মাছির মারা যেতো। তারপরেও ব্রিটেন এই দেশ থেকে অর্থ পাচার বন্ধ করেনি। ব্রিটিশ সরকার ভারতে খাদ্যশস্য রপ্তানির ওপর শুল্কারোপ করায় দূর্ভিক্ষ দেখা দেয় এবং ক্রয় ক্ষমতা কমে যায়।
উৎস পাটনায়েকের আগে ভারতীয় নেতা শশী থারুর তার বই ‘ইনগ্লোরিয়াস এম্পায়ারে’ ভারতে ব্রিটেনের শোষণের কথা স্মরণ করিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলকে ‘গনহত্যাকারী একনায়ক’ বলে আখ্যা দেন। সম্পাদনা : আসিফুজ্জামান পৃথিল