মাছুম বিল্লাহ : কৃষিঋণ মওকুফ ও ফসলের ন্যায্যমূল্যের দাবিতে ভারতের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কৃষক জমায়েত হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় দেশটির রাজধানী দিল্লির রামলীলা ময়দানে এক লাখেরও বেশি কৃষক জমায়েত থেকে কৃষকদের ঋণ মওকুফ এবং ফসলের ন্যায্য দাম নিয়ে সংসদে আইন পাশের জানানো হয়। পাশাপাশি জাতীয় কৃষি ঋণ মওকুফ কমিশনের দাবি জানানো হয়।
ভারতীয় মিডিয়ার খবর অনুযায়ী, দুদিন ব্যাপী এই কৃষক আন্দোলনের প্রথমদিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যে জমায়েত হয়েছে সেটি ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কৃষক আন্দোলন হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে ২০০ সংগঠনের প্রায় ১ লাখ কৃষক বৃহস্পতিবার বিকেলে পায়ে হেঁটে দিল্লির রামলীলা ময়দানে জড়ো হয়। সেখানে এক এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। আজ শুক্রবারও সমাবেশ শেষে সংসদভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করবেন কৃষকরা।
এনডিটিভির এক খবরে বলা হয়, ঋণ মওকুফ এবং ফসলের ন্যায্যমূল্যের দাবিতে দেশটির মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ,পশ্চিমবঙ্গ ও অন্যান্য রাজ্যের কৃষকরা আনন্দ বিহার রেল স্টেশন থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লি হয়ে রামলীলা ময়দানে উপস্থিত হন। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বিজবাসন এবং দ্বারকা সংলগ্ন এলাকার যান চলাচল। এই নিয়ে গত কয়েকমাসে তৃতীয়বার কৃষক আন্দোলনের সাক্ষী হচ্ছেন দিল্লিবাসী। তবে এর আগে এত বড় কৃষক আন্দোলন হয়নি।
হিন্দি দৈনিক জাগরণের এক খবরে বলা হয়েছে, বিভিন্ন বামপন্থী কৃষক সংগঠনকে নিয়ে ২০১৭ সালের জুন মাসে ‘অল ইন্ডিয়া কিষাণ সঙ্ঘর্ষ কোঅর্ডিনেশন কমিটি’ গড়ে ওঠে। ঋণ মওকুফ এবং ফসলের ন্যায্যমূল্যসহ মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ ও অন্যান্য রাজ্যের কৃষকদের সমস্যাগুলি তুলে ধরাই তাদের মূল লক্ষ্য। এ বারে তাদের দাবি, কৃষকদের ঋণ মওকুফ এবং ফসলের ন্যায্য দাম নিয়ে সংসদে তিন সপ্তাহের বিশেষ অধিবেশন বসুক। গড়ে তোলা হোক জাতীয় কৃষি ঋণ মওকুফ কমিশন। এ ব্যাপারে উদ্যোগী হোন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংসদে বিল পাস করানো হোক।
এবিপি নিউজকে সংগঠনের আহ্বায়ক সদস্য এবং সিপিএম সদস্য হান্নান মোল্লা জানান, শুক্রবার রামলীলা ময়দান থেকে সরাসরি সংসদের উদ্দেশে রওনা দেব আমরা। পার্লামেন্ট স্ট্রিটে কৃষি সংক্রান্ত একাধিক সমস্যা নিয়ে বক্তৃতা করা হবে। বিজেপি ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও বক্তৃতা করবেন।’
‘অল ইন্ডিয়া কিষাণ সভা’র জাতীয় সম্পাদক অতুল অঞ্জন বলেন, ‘‘কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী, অন্ধ্রপ্রদেশ, কেরল এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী সব বিরোধী দলের অনেক নেতাকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’ সম্পাদনা : প্রিয়াংকা আচার্য্য