আসিফুজ্জামান পৃথিল : যদি জি-২০ কোন মিউজিক ফেস্ট হতো, তবে তা হতো বিশে^র সবচেয়ে কাঙ্খিত সঙ্গীত আসর। আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আয়ারসে জি-২০ সম্মেলনকে বলা যায় বৈশি^ক ক্ষমতা প্রদর্শন এবং বিশ^ নেতৃত্বের এক চলমান ফেস্টিভ্যাল। যেখানে একত্রিত হয়েছেন বিশে^র সবচেয়ে ক্ষমতাধর নেতারা। এই জি-২০ সম্মেলনই দেখাবে ভবিষ্যত বিশে^র পরিকাঠামো কেমন হবে। সিএনএন
এককালে সবার চোখে ঘুম নিয়ে আসা এই ২০ জাতির সম্মেলন এখন কূটনীতির রশি টানাটানি খেলায় পরিণত হয়েছে। এখানেই অনুষ্ঠিত হবে বিশ^ রাজনীতি-অর্থনীতির বহু নাটক। এখানে মুখোমুখি হবেন; পুতিন-ট্রাম্প, ট্রাম্প- শি জিং পিং, এরদোগান-মোহাম্মদ বিন সালমান। এখানেই স্বাক্ষর হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডা বাণিজ্য চুক্তি। বহুল আলোচিত নাফটা। খসড়া হয়ে যেতে পারে চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যচুক্তির। ইতোমধ্যেই ক্রিমিয়া কেন্দ্রিক উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক বাতিল করেছেন ট্রাম্প। তবে এই সম্মেলনে ৪৮ ঘন্টায় ৭টি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরিকল্পনা ট্রাম্পের! যা খুব সম্ভবত একটি বিশ^রেকর্ড। এছাড়াও শিডিউল না হলেও ট্রাম্পের সঙ্গে থেরেসা মে’র একটি বৈঠকের সম্ভাবনাও রয়েছে। এই বৈঠকে ব্রেক্সিট পরবর্তী যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
তবে এতাকিছুর পরেই এবারের সম্মেলনের তারকা নিস:ন্দেহে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এবার তার সঙ্গে যে নেতাই বৈঠক করবেন তা সংবাদের শিরোনাম হতে বাধ্য। তার সঙ্গে বিশ^ নেতাদের আচরণেই বোঝা যাবে খাসোগজি হত্যা ইস্যুতে কতটা বিপদে পড়তে পারেন এমবিএস। তবে ইতোমধ্যেই ম্যাঁক্রো, মোদী এবং ট্রাম্পের সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে। সবাই তার সঙ্গে ছবিও তুলেছেন। এমবিএস এর পাশে হাস্যোজ্জল ম্যাঁক্রো এবং মোদীকে দেখা গেলেও ট্রাম্প ছিলেন অস্বাভাবিক নিস্প্রভ।
জি-২০ এর সাইডলাইনে বিরামহীন বৈঠক চলবে। এই বৈঠকগুলোতেই নির্দারিত হবে অন্তত এক বছরের জন্য পৃথিবীর ভাগ্য। ইতোমধ্যেই বৈঠককে ঘিরে গুজবের কোন অন্ত নেই। তবে অন্তত ৩টি পয়েন্টে সিদ্ধান্ত হবে এবারের সম্মেলনে। প্রথমত, বিশ^ বাণিজ্য এবং ট্রাম্পের শুরু করা বাণিজ্য যুদ্ধ। তৃতীয়ত, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ভাগ্য নির্ধারন এবং তৃতীয়ত ব্রেক্সিট পরবর্তী ইউরোপের আকার কেমন হবে।
কূটনীতি এবং রাজনীতি বড়ই আশ্চর্যের বিষয়। ক্ষণে ক্ষণে রঙ পাল্টানো রাজনীতিবিদদের অবিরাম পাশাখেলার গুরুত্বপূর্ন মঞ্চ হতে যাচ্ছে এই বুয়েনস আয়ারসের সম্মেলন।