কক্সবাজার প্রতিনিধি : মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন নিপীড়নে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুরা বহন করছে মরণব্যাধি এইচআইভি (এইডস) ভাইরাস। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পুরো কক্সবাজারে যতজন এইডস রোগী নাই তারও দ্বিগুণ রোহিঙ্গাদের মাঝে। এদিকে রোহিঙ্গারা অবৈধভাবে ক্যাম্প ছেড়ে শহরের দিকে পালিয়ে আসা এবং স্থানীয়দের সাথে মিশে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন সচেতন মহল। তারা বলছেন, রোহিঙ্গাদের কারণে এইচআইভি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে মারাত্বক ক্ষতি হবে।
সিভিল সার্জেন অফিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রোহিঙ্গাসহ কক্সবাজারে এইডস রোগীর সংখ্যা ৪১১ জন। তার মধ্যে গত বছরের ২৫ আগষ্ট থেকে বাংলাদেশ আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মধ্যে ২৮৫ জনের শরীরে এইচআইভি ভাইরাস রয়েছে। এর মধ্যে ৯৫ জন হল রোহিঙ্গা পুরুষ, ১৪৭ জন হল রোহিঙ্গা নারী। ছেলে শিশু রয়েছে ২২ জন আর মেয়ে শিশু রয়েছে ২১ জন। সবমিলে ২৮৫ জন রোহিঙ্গার মাঝে রয়েছে এইডস। এর মধ্যে মারা গেছেন ১৬ জন। মৃতদের মধ্যে ৬ জন পুরুষ, ৭ জন নারী এবং মেয়ে শিশু হচ্ছে ৩ জন।
রোহিঙ্গাদের আবাসস্থল উখিয়ার স্থানীয় যুবক মোহাম্মদ রফিক জানান, পুরাতন রোহিঙ্গাদের সহযোগিতায় অনেক রোহিঙ্গা নারী পতিতাবৃত্তির সাথে জড়িয়ে পড়েছে। তারা নানা কৌশলে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে শহরে ঢুকে পড়ছে। দেখা যায়, ওই এলাকার বেশিরভাগ স্থানীয় নারীরা বোরকা ও হিজাব পরিধান করে। যার ফলে চেহেরা দেখা যায়না। আর ওটিকে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছে রোহিঙ্গা নারী পাচারকারী দালাল চক্র। এতে অনেক রোহিঙ্গা নারী পতিতাবৃত্তির সাথে জড়িয়ে পড়ছে। আর ছড়াচ্ছে এইচআইভি ভাইরাস। যদিও ক্যাম্প থেকে পালানোর চেষ্টাকালে রোহিঙ্গারা প্রতিনিয়ত প্রশাসনের হাতে ধরা পড়ছে।
তার কথার সাথে তাল মিলিয়ে মোহাম্মদ জিয়া নামে কক্সবাজার শহরের এক আবাসিক হোটেলের ম্যানেজার জানান, হোটেল-মোটেল জোনে পতিতাবৃত্তির সাথে জড়িত রয়েছে অনেক রোহিঙ্গা।
কক্সবাজার মাদক নিরাময় কেন্দ্র নোঙ্গর পরিচালক দিদারুল আলম রাশেদ জানান, গত ১৫ মাসের অধিক সময় ধরে এইচআইভি ভাইরাস বহনকারী রোহিঙ্গারা এদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তার মধ্যে অনেক রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ইতিমধ্যে শহরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে। এই মুহুর্তে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে প্রত্যেক রোহিঙ্গার এইচআইভি ভাইরাস পরীক্ষা করা এবং তাদের চিকিৎসার আওতায় আনা।
কক্সবাজার সিভিল সার্জেন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর জানান, এইচআইভি সনাক্ত করণ ও চিকিৎসার জন্য উখিয়া এবং কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মেডিকেল সেন্টার রয়েছে। যেখানে এইডস এর চিকিৎসা করানো হয়। এছাড়া এইডস সর্ম্পকে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন এনজিও সংস্থার ১২ টি টিম কাজ করছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে।