আবু সুফিয়ান শুভ : মিরপুরে উইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট ক্যাপ পান সাদমান। তামিম ইকবালের ইনজুরি, ইমরুল কায়েসের হঠাৎ অফফর্মে যাওয়ায় বাদ পড়া। তাই কঠিন দায়িত্বই ছিল তার কাঁধে। তার ষোলোআনা না পোষাতে পারলেও পেরেছেন অনেকটাই। অভিষেকেই ৭৬ রানের ঝলমলে এক ইনিংস। সেঞ্চুরি করলে পূর্ণতা হয়তো পেতো। কিন্তু তার জন্য দ্বিতীয় ইনিংস হয়তো আছে।
ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত থাকায় সবসময়ই সাদমানকে ক্রিকেটার হিসেবে গড়তে চেয়েছিলেন শহিদুল। হয়েছেও তাই। বাবার ইচ্ছা রাখতে পেরেছেন সাদমান। তবে এমন দিনে মাঠে নেই বাবা শহিদুল। নিয়মিতই যার শেরে বাংলায় পথ চলা, তিনি হঠা আটকে গেলেন এক পারিবারিক জটিলতায়। তবে যেখানেই থাকেন টিভিতে নিশ্চয় দেখেছেন ছেলের কারিশমা। তাতে আফসোস হয়তো কিছুটা কমেছে সাদমানের। তবে ম্যাচ শেষে বাবার কৃতিত্ব দিতে ভোলেননি এ তরুণ।
‘(ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে ওঠার পেছনে) বাবার ভূমিকা অবশ্যই আছে। আব্বু সব সময় ক্রিকেটে সহযোগিতা করেছে। আমি সব সময় ক্যাম্পে যেতাম। অনূর্ধ্ব ১৫-১৭ ক্যাম্পে সব সময় আমাকে নিয়ে যেত। তখন আমি ছোট ছিলাম। তখন থেকেই আমার ইচ্ছা ছিল খেলোয়াড় হবো। যেভাবে আব্বু খেলার জন্য বলছে ….আমি একাডেমি কিংবা স্কুল ক্রিকেট থেকে ওভাবেই তৈরি হয়েছি। কিভাবে খেলতে হয়, কিভাবে লাইফ সেট করতে হয় ক্রিকেটারদের ওগুলো আমাকে এখনও বলে। নিজেকে চেষ্টা করি ওভাবে রাখার। ’ বাবা শহিদুল ইসলাম সম্পর্কে এমনটাই বললেন সাদমান।
অভিষেকে দারুণ ইনিংসটা অবশ্য এমনি এমনি আসেনি। এর জন্য বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। ধীরে ধীরেই তৈরি করা হয়েছে তাকে। মূলত টেস্ট ক্রিকেটের জন্যই। তার জন্য নিয়মিত প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছেন তিনি। ৪২টি ম্যাচে ৪৬.৫০ গড়ে করেছেন ৩০২৩ রান।
সম্প্রতি শেষ হওয়া জাতীয় লিগে ঢাকা মেট্রোর হয়ে আসরের সর্বোচ্চ ৬৪৮ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এ বছর প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ১৪ ম্যাচে ৫৬.০৪ গড়ে ১১৭১ রান করেন তিনি। এছাড়াও ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৪১৬ রানের রেকর্ড করেছেন।
আর এ পারফরম্যান্সের পুরষ্কার হিসেবেই প্রত্যাশিত টেস্ট ক্যাপ পেয়েছেন সাদমান। আর অভিষেকে প্রাপ্ত সুযোগ সদ্ব্যবহারটাও করলেন দারুণভাবে। প্রত্যাশা হয়তো এর চেয়েও অনেক বড় কিছু করবেন আগামীতে। সাদমানও জানেন কাজটা এখনও অনেক বাকি, ‘আমি পরিপূর্ণ করতে পারিনি। যতটুকু হয়েছে….আশা করি পরবর্তীতে দলের জন্য যেন কিছু করতে পারি।’