স্পোর্টস ডেস্ক : বার্সেলোনার প্রাণ ভোমরা ও আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসির ভক্ত হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক হইচই ফেলেছিলো এক আফগান কিশোর। সেই হইচই এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, মুরতাজা আহমাদী থেকে তার নাম হয়েছিল ‘লিটল মেসি’। তার জনপ্রিয়তার খবর পৌঁছে গিয়েছিল স্বয়ং মেসির কাছেও। আফগানিস্তানের সেই ছোট মেসিকে জীবন বাঁচাতে তার বাড়ি থেকে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। খবর বিবিসির
এই ঘটনা এবারই প্রথমবার নয়। তালেবানের ভয়ে এর আগেও একবার ঘরছাড়া হতে হয়েছিল ছোট মেসির পরবিারের। প্রাণ বাঁচাতে দ্বিতীয়বারের মতো আবারও আফগানিস্তান নিজের বাড়ি ছেড়ে পালাতে হয়েছে সাত বছর বয়সী এই বালককে।
আফগানিস্তানের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলীয় গজনী প্রদেশে বসবাস করছিলো মুরতাজার পরিবার। কিন্তু পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে তারা এখন পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে রাজধানী শহর কাবুলে। এর আগে ২০১৬ সালেও তারা পাকিস্তানে স্বল্পমেয়াদে শরণার্থী সুবিধা পেতে আবেদন করেছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে অর্থ সংকটে পড়ায় দেশে ফিরে আসে তার পরিবার। আর এবার পরিস্থিতি কেমন হয় সেটা এখনি কিছু বলা যাচ্ছেনা।
২০১৬ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিলেন আফগানিস্তানের কিশোর মুরতাজা আহমাদী। প্লাস্টিক ব্যাগ দিয়ে মেসির জার্সি বানিয়ে তা পরিধান করেছিল মুরতাজা আহমাদী। তার সেই ছবি ছড়িয়ে পড়েছিল সারা পৃথিবীতে। দরিদ্র হওয়ায় জার্সি কেনার সামর্থ্য নেই, তাই পলিথিন কেটে জার্সি বানিয়ে তার ওপর মেসির নাম ও জার্সি নাম্বার লিখে গায়ে চাপিয়েছিল মাত্র পাঁচ বছর বয়সে।
পরে জার্সি পরা তার সেই ছবি কেউ একজন পোস্ট করে সামাজিক মাধ্যমে। এরপর সেটি ভাইরাল হয়ে পড়ে আর লোকজনও তাকে ‘ছোটো মেসি’ ডাকতে শুরু করে। আর এ খবর পৌঁছায় লিওনেল মেসি পর্যন্ত। ইউনিসেফের মাধ্যমে তিনি নিজের স্বাক্ষর করা জার্সি পাঠান তাকে।
পরে বার্সা তারকা যখন ২০১৬ সালে দোহাতে যান প্রীতি ম্যাচ খেলতে তখন মুরতাজাকে মেসির সাথে সাক্ষাতের জন্য ডাকা হয়। সেখানে প্রিয় তারকার সাথে কিছুটা হাটার সুযোগও পায় এই বালক। মুরতাজার পরিবার বলছে এই বিখ্যাত হওয়ার কারণেই তালেবানদের টার্গেটে পরিণত হয়েছে মুরতাজা।
তার মা শাফিকা বলছেন, ‘ওরা বলছে তোমরা ধনী হয়ে গেছো। মেসির কাছ থেকে যা টাকা পেয়েছো তা আমাদের দাও। নাইলে তোমার ছেলেকে নিয়ে যাবো’। তিনি বলছেন বাড়ি থেকে আসার সময় তারা কিছুই সাথে নিতে পারেননি, এমনকি মেসির কাছ থেকে পাওয়া জার্সিটাও।