আমার দেশ • নগর সংস্করণ • লিড ৪ • শেষ পাতা
সংসদ নির্বাচনে তারকা প্রার্থীদের সম্পদের আয়-ব্যয়ের হিসেব
শোভন দত্ত : ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগে প্রার্থীদের আয়-ব্যয়ের যে হিসেব প্রকাশ করা হয়েছে তা নিয়ে মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
বিশেষভাবে সবার নজর রাজনৈতিক নেতা আর সেলেব্রিটি প্রার্থীদের হলফনামা এবং আয়কর রিটার্নের দিকে যেখানে তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। এই তথ্য নির্বাচন কমিশন বা ইসি’র ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়, এখানে বিভিন্ন দলের ছয়জন তারকা প্রার্থীর আয়-ব্যয়ের হিসেবের অংশবিশেষ তুলে ধরা হলো:
মাশরাফি বিন মর্তুজা (নড়াইল-২ আওয়ামী লীগ) : ক্রিকেট জগত থেকে রাজনীতিতে সরে আসা মাশরাফির আয় এবং সম্পদের যে বিবরণ দিয়েছেন তাতে দেখা যাচ্ছে, তার কাছে নগদ অর্থ রয়েছে এক কোটি ৩৭ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকা। তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে গচ্ছিত রয়েছে প্রায় ছয় কোটি টাকা। চাকরি থেকে তিনি আয় দেখিয়েছেন ৩১ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকা। কৃষিখাত থেকে আয় হয়েছে পাঁচ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। পাশাপাশি তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দ্যা ম্যাশ লিমিটেড থেকে তার আয় হয়েছে সাত লক্ষ ২০ হাজার টাকা।
বেবি নাজনীন (নীলফামারী-৪, বিএনপি) : কণ্ঠশিল্পী বেবি নাজনীন যে হলফনামা দাখিল করেছেন তাতে দেখা যাচ্ছে, তার কাছে বর্তমানে নগদ টাকা রয়েছে পাঁচ লক্ষ। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া রয়েছে এক লক্ষ টাকার স্বর্ণালংকার। ৪৫ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী। ৬৫ হাজার টাকার আসবাবপত্র এবং ৩৫ লাখ টাকা মূল্যের একটি অ্যাপার্টমেন্ট। পেশা থেকে তার আয় হয়েছে পাঁচ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা।
মমতাজ বেগম (মানিকগঞ্জ-২ আওয়ামী লীগ) : লোকসঙ্গীত শিল্পী মমতাজের হলফনামায় দেখা যাচ্ছে, তার আয় আনুমানিক ৩৯ লক্ষ টাকা। তার কাছে নগদ রয়েছে পাঁচ লক্ষ টাকা। স্বামীর নামে রয়েছে ২০ লক্ষ টাকা।
তার নিজের নামে ব্যাংকে গচ্ছিত রয়েছে ৮৬ লক্ষ ৯৯ হাজার টাকা। স্বামীর নামে ব্যাংকে গচ্ছিত রয়েছে ২০ লক্ষ টাকা। এর বাইরে মধু উজালা কোল্ড স্টোরেজের শেয়ার রয়েছে তার নামে সাড়ে তিন কোটি টাকার।
আর তিন সন্তানের নামে শেয়ার রয়েছে ৬৫ লক্ষ টাকার।
স্থাবর সম্পদের মধ্যে মমতাজের রয়েছে মহাখালীতে পাঁচ কাঠা জমির ওপর পাঁচ তলা ভবন, যার মূল্য ধরা হয়েছে ছয় কোটি ৯৯ লক্ষ টাকা। আর মানিকগঞ্জে ২১ শতক জমির ওপর দালান, যার মূল্য ৫৭ লক্ষ টাকা।
মো. মাসুদ পারভেজ (বরিশাল-২ জাতীয় পার্টি) : চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রয়োজক, পরিচালক মো. মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা নামেই বেশি পরিচিত। তিনি হলফনামায় জানিয়েছেন, পেশা থেকে তার আয় আট লক্ষ ১৮ হাজার টাকা। ব্যাংকে নগদ গচ্ছিত রয়েছে ১৬ লক্ষ টাকা। মূলধনী লাভ দেখিয়েছেন তিন লক্ষ ১০ হাজার টাকা।
ঢাকার উত্তরায় তার বাড়ির মূল্য ধরা হয়েছে নয় লক্ষ টাকা। এর বাইরে কাকরাইলে অফিসের মূল্য ১৬ লক্ষ, বান্দরবানের রাবার বাগানের মূল্য দুই লক্ষ, তুরাগের দিয়াবাড়ীতে ৪৫ শতক জমির মূল্য এক কোটি ৮০ লক্ষ আর কক্সবাজারে ৩৮ শতাংশ জমির মূল্য দেখিয়েছেন ১৩ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা।
রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা (সিরাজগঞ্জ-১ বিএনপি) : কণ্ঠশিল্পী রুমানা মোর্শেদ, যিনি কনকচাঁপা নামেই বেশি পরিচিত, তিনি তার হলফনামায় জানিয়েছেন, পেশা থেকে তার আয় হয়েছে ছয় লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা। অন্যান্য সূত্রে আয় হয়েছে চার লক্ষ ৭১ হাজার টাকা। তার কাছে নগদ অর্থ রয়েছে ৬৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। ব্যাংকে স্থায়ী আমানত রয়েছে ৬৯ লক্ষ টাকা। শেয়ার রয়েছে তিন লক্ষ ৩১ হাজার টাকার। কৃষি জমি রয়েছে ২০ লক্ষ টাকার। অকৃষি জমি, ২৬ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার। আর তার অ্যাপার্টমেন্টের দাম ধরা হয়েছে ৪০ লক্ষ টাকা।
মো. আশরাফুল হোসেন আলম, হিরো আলম (বগুড়া-৪, স্বতন্ত্র) : হিরো আলমের হলফনামায় দেখা গেছে তার আয় মোট দুই লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা। পেশা থেকে আয় দুই লক্ষ ৫২ হাজার টাকা। বাকিটা কৃষিখাত থেকে।
নয় শতক জমির ওপর তার পৈত্রিক বাড়ি রয়েছে, পাশাপাশি দেড় বিঘা জমির ওপর রয়েছে পৈত্রিক কৃষিজমি।
বিবাহসূত্রে পাওয়া ১০ ভরি স্বর্ণালংকারের কথা তিনি তার হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।