কক্সবাজারে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়
কক্সবাজার প্রতিনিধি : বিজয় দিবসের ছুটিতে দেশের পর্যটন রাজধানী নামে পরিচিত কক্সবাজার পর্যটকদের পদভারে মুখরিত। সমুদ্র সৈকত, বিপণী কেন্দ্রসহ জেলার পর্যটন স্পটগুলো পর্যটকদের কোলাহলে প্রাণচাঞ্চল হয়ে ওঠেছে। খালি নেই শহরের চার শতাধিক হোটেলের কোন কক্ষ। বিজয় দিবস ও আগের দু’দিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়ে বাড়ছে হয়রানিও।
হোটেল মালিক সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে শহরের চার শতাধিক হোটেলের প্রায় সব কক্ষ ১৫ থেকে ১৭ ডিসেম্বর, ২৪ থেকে ২২ ডিসেম্বর ও ২৩ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আগাম বুকিং হয়ে গেছে। এখন বাকী দিনগুলোরও চলছে বুকিং। প্রতিবছর ডিসেম্বর মাসে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শেষে ছুটির দিনগুলোতে অবকাশ যাপনের জন্য হাজার হাজার পর্যটক কক্সবাজারে বেড়াতে আসেন।
অপরদিকে বিশে^র একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের কোন জাহাজেই সীট খালি ছিল না। চারিদিকে ঠাই ঠাই অবস্থা। জাহাজে কোন টিকেট না পেয়ে অনেকেই কাঠের বোট নিয়েও স্বপ্নের সেন্টমার্টিন গেছে অনেক পর্যটক। সেন্টমার্টিনদ্বীপ, মহেশখালী, হিমছড়ি, ইনানী, দরিয়ানগর, সোনাদিয়া, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকা গুলো বিপুল পর্যটক সমাগমে নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। কক্সবাজার শহরের বার্মিজ মার্কেট, বৌদ্ধ মন্দির ও রামুর বৌদ্ধ মন্দিরেও পর্যটক আনাগোনা প্রচুর।
পর্যটন জাহাজ কেয়ারী ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের আনোয়ার হোসেন বলেন, আগামী ৩১ ডিসেম্বর (থার্টিফাস্ট নাইট) পর্যন্ত তাদের জাহাজে টিকেটের সংকট রয়েছে। এত দিন ভ্রমণপিপাসু লোকজন বের হতে পারেননি নানা কারণে।
ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টোয়াক বাংলাদেশ) সভাপতি রেজাউল করিম রেজা জানান, এ মাসের শুরু থেকে বেশ জমজমাট হয়ে ওঠেছে কক্সবাজার। হোটেল মোটেলে ঠাঁই নেই অবস্থা। সেন্টমার্টিনগামী জাহাজসমূহের টিকেটও আগাম বুকিং হয়ে যাচ্ছে।
বিজয় দিবসের ছুটিতে ভিড়ের মাঝে পর্যটকরা কক্সবাজারে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার না হন সে জন্য সাদা পোশাকধারী পুলিশ ও বীচে ট্যুরিস্ট পুলিশ সক্রিয় রয়েছে বলে জানান ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফখরুল ইসলাম।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার জানান, বিজয় দিবসের ছুটিতে চার শতাধিক হোটেল, গেস্ট হাউজ ও কটেজ পর্যটকে ভরে গেছে। গেল তিনদিনে প্রায় দুই লাখ পর্যটক এসেছে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাস ভরপুর থাকবে পর্যটক। শীত মৌসুমে কক্সবাজারে পর্যটকের আগমন বেশি ঘটে বলে তিনি জানান।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফখরুল ইসলাম জানান, বিজয় দিবসের ছুটিতে পর্যটকের ঢল নামে কক্সবাজার সৈকতে। শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিকালে সৈকতের ডায়াবেটিক পয়েন্ট থেকে কলাতলী পয়েন্টে পর্যন্ত লাখো পর্যটকের উপস্থিতি দেখা মিলে। এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম জয় জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এছাড়া ছিনতাই, বখাটেদের উৎপাত ও ইভটিজিং প্রতিরোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত সক্রিয় আছে। সম্পাদনা : ইকবাল খান