ম্যাজিক নাম্বার ১৫১ ও মনোনয়ন
অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান : নির্বাচনে জয়ী হয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় উপনীত হওয়ার জন্য ১৫১টি আসন প্রয়োজন। কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর মূল লক্ষ্য হচ্ছে ১৫১টি আসন পাওয়া। অর্থাৎ ম্যাজিক নাম্বার ১৫১। যেভাবেই হোক ১৫১টি আসন পেতেই হবে। এই উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি তাদের পছন্দ মতো ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেবে। অর্থাৎ যাদেরকে মনোনয়ন দিলে ১৫১টি আসন পাওয়া সম্ভব, তাদেরকেই মনোনয়ন দেবে। সেক্ষেত্রে জয়ের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে দলগুলো মনোনয়ন দেবে। আর এটিই স্বাভাবিক রাজনীতি। বরাবরই রাজনীতিতে পারিবারিক ঐতিহ্য বিষয়টি নির্বাচনের প্রার্থিতা নির্ধারণের নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। তবে বিষয়টি কেবল আমাদের দেশেই নয়। পাক ভারতীয় উপমহাদেশে বেশ আগে থেকেই রাজনীতিতে পারিবারিক ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির রেওয়াজ চালু রয়েছে। ভারতের বিহার, উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র থেকে শুরু করে অনেক অঞ্চলেই দেখা যায়, কারো দাদা এমপি ছিলেন, কারো বাবা মন্ত্রী ছিলেন, অর্থাৎ পরিবারে অন্য সদস্যরা কোনো না কোনোভাবে রাজনীতিতে জড়িত। এমনকি ব্রিটিশ পার্লামেন্টেও পারিবারিকভাবে রাজনীতিতে যুক্ত থাকার বিষয়টি রয়েছে। কাজেই এটি কেবল বাংলাদেশে নতুন এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। একটি বিষয় শুরু থেকেই বলা হচ্ছিল যে, এবার নির্বাচনে অনেক নতুন মুখ দেখা যাবে। ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। অনেক পরিবর্তন বলতে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ পরিবর্তন করা, আসলে কোনো দেশেই হয় না। পালামেন্টারি ফর্ম অব গভর্নমেন্ট যেখানেই আছে, সেখানেই প্রত্যেক নির্বাচনে ১০ থেকে ২০ শতাংশের বেশি প্রার্থীর পরিবর্তন দেখা যায় না। একেবারে ১০০ শতাংশ কিংবা ৫০ শতাংশ পরিবর্তন কোথাও হয় না। প্রতিবেশি দেশ ভারতেও তেমন পরিবর্তন হয়নি। ইতোমধ্যে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, আওয়ামী লীগের ২৩৩টি আসনের মধ্যে ৪৫টি আসনে নতুন মুখ আসছে। নতুন প্রার্থীর এই সংখ্যা শেষ পর্যন্ত ৫০ জন হয়, তাহলে ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। আঞ্চলিক রাজনীতির প্রেক্ষাপটে নির্বাচনে এই পরিবর্তন ঘটানো নিসন্দেহে ইতিবাচক এবং প্রশংসনীয়। এবার বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে নির্বাচন অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে। আওয়ামী লীগ একটি পুরানো রাজনৈতিক দল। কাজেই এবার প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নতুন করে ব্যাপক কোনো এক্সপেরিমেন্টে যায়নি। এটি তাদের বিবেচনার মধ্যেই ছিল। কয়েকটি আসনে আমরা একাধিক প্রার্থী লক্ষ্য করছি। তবে এমনটি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। কারণ নমিনেশন যখন যাচাই বাছাই করা হবে, তখন কেউ ঋণ খেলাপি, মামলাসহ আরও অনেক বিষয়ই সামনে চলে আসবে। এখন যারা প্রার্থীর সমর্থক এবং ভোটার, তারা হয়তো তার সম্পর্কে অনেক কিছুই জানেন না। যারা উচ্চ পদে থাকেন, নমিনেশন প্রত্যাশা করেন, অনেক সময় তাদের নানা সমস্যা থাকে। এতে শেষ পর্যন্ত দেখা গেল, তার মনোনয়ন টিকলো না। সেজন্য অন্য একটি পথ বা অপশন খোলা রাখতে হয়। তবে এবার মনোনয়ন দেয়া এবং পাওয়ার পরিবেশ অত্যন্ত ভালো। নির্দিষ্ট দিন সকাল থেকে চিঠি দিয়ে প্রার্থীকে মনোনয়নের বিষয়টি জানানো হচ্ছে। অন্যান্যবার মনোনয়ন বঞ্চিতরা তাৎক্ষণিক সড়ক অবরোধ, হরতালসহ অনেক কিছু করেছে। কিন্তু এবার এরকম আলামত সীমিত। আর এবার এমন হওয়ার বেশি সুযোগও নেই। কারণ এবার দল থেকে কঠোর নিদের্শনা দেয়া হয়েছে। এবার মনোনয়নপত্র বিক্রি করার যে হিড়িক আমরা লক্ষ্য করলাম, তাতে আগামী বার নির্বাচনে চিন্তা করতে হবে না। সব দল লোকবল নিয়ে এসে মনোনয়ন ক্রয় করা এবং পুরো বিষয়টি তথাকথিত উৎসবে পরিণত করা। আমরা কিছু লোক নির্বাচনকে উৎসব হিসেবে আখ্যায়িত করছি। আমি মনে করি, নির্বাচনের সাথে উৎসব শব্দটি সংযুক্ত করা আপত্তিকর। বলা হয়ে থাকে নির্বাচন উৎসবমুখর হবে। পৃথিবীর কোন দেশেই নির্বাচন উৎসবমুখর হয় না। যেসব দেশে গণতন্ত্রের প্রকৃত চর্চা হয় যেমন- ইংল্যান্ড, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা। এই সব দেশের অনেক মানুষ টেরও পান না কখন, কোথায়, কীভাবে নির্বাচন হয়? কিন্তু এখানে নির্বাচনকে উৎসব বলা হয়। কিন্তু বাঙালির উৎসব মানেই তো খাওয়া-দাওয়া, প্রচুর আতশবাজি, হইহুল্লা, কনসার্ট, গানবাজনা ইত্যাদি। বাঙালিদের উৎসবে এগুলোই জড়িত। কিন্তু উৎসবের উক্ত অনুষঙ্গগুলো নির্বাচনে নিষিদ্ধ। নির্বাচনে কাউকে কিছু খাওয়ানো যাবে না, হইহুল্লা, মাইক বাজানো, আতশবাজি করা যাবে না। তাহলে নির্বাচনকে কেন উৎসব বলা হচ্ছে? বরং আমরা উৎসব বলে নির্বাচনকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করছি। নির্বাচন কোনো আবেগের বিষয় নয়। বরং আমাদের উপলব্ধি করা উচিত যে, নির্বাচন খুবই ভাবগাম্ভীর্য্যপূর্ণ অনুষ্ঠান, জাতির জীবনে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। কারণ এ নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো, সুচিন্তিত মতামত প্রদান করবো যে, আগামী পাঁচ বছর কে বা কারা কিভাবে রাষ্ট্র চালাবেন। কারা ক্ষমতায় থাকবেন? দেশের জন্য তারা আসলে কী করবেন? এজন্য আমাদের দায়িত্ব হওয়া উচিত রাজনৈতিক দল, প্রার্থী, ইশতেহার, উন্নয়ন সম্পর্কে ভোটারদের অবহিতকরণ। কারণ অনেক প্রার্থী আছেন, যাদের সম্পর্কে ভোটারদের নিকট কোনো তথ্য থাকে না। থাকলেও আংশিক তথ্য। তথ্য গ্রহণ করার সক্ষমতা ভোটারদের নেই। এখানেই ভোটারদের সাহায্য-সহযোগিতা করা দরকার। তা না করে বলা হচ্ছে নির্বাচন উৎসব! নির্বাচন উৎসব কেন হবে? উৎসবমুখর করা মানেই নির্বাচনে টাকা ব্যয় করা, হইহুল্লা করা, ট্রাকে গানবাজনা ইত্যাদি। আমি মনে করি, নির্বাচন কমিশনের উচিত ঘোষণা দেয়া যে, নির্বাচন কোনো উৎসব নয়। সবাই ভাবগাম্ভীর্যের সাথে সম্মান প্রদর্শনপূর্বক নিজ বিচার, বুদ্ধি, বিবেক ও বিবেচনার সাথে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রয়োগ করবেন। বলা হয়ে থাকে, অনেকে নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য নির্বাচন করেন। আমি যেহেতু বিষয়গুলো ভিতর থেকে দেখি, সর্বক্ষেত্রে বিষয়টি এক রকম নয়। সমাজে এমন অনেক লোক আছেন, যাদের টাকাপয়সা এখন অনেক। তারা এখন সমাজ এবং এলাকার জন্য সত্যিকার অর্থেই কিছু করতে চান। অনেক কিছুই হয়ত তারা করেছেন। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, রাজনীতি ছাড়া মানুষের মঙ্গল বা কল্যাণ সাধন করা যাবে না। কারণ রাজনীতিই হলো দেশ, সমাজ ও রাষ্ট্রকে বদলানোর একমাত্র উপায়। তবে এর বিপরীত ধ্রাার অনেক লোকজনও রয়েছে। পার্লামেন্টারি গভর্ণমেন্ট সিস্টেমে সরকার হচ্ছে রাজনৈতিক দলের। অর্থাৎ রাজনৈতিক দলই সরকার। যদিও আমরা জানি গণতন্ত্রের সরকার জনগণের দ্বারা, জনগণের জন্য, জনগণের। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। এজন্য দলীয় ফোরামে যারা মনোনয়ন চাইবে, তাদের জন্য কিছু আইন করার দরকার ছিল। যারা যে দলের নমিনেশনের জন্য আবেদন করবেন, তারা স্বতন্ত্র, বিদ্রোহী বা অন্য কোনোভাবে নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না। কারণ দল ক্ষমতায় থাকুক, বা না থাকুক ব্যক্তি দলের দ্বারা উপকৃত হয়। আর কিছু না হোক, দল ক্ষমতায় ছিল, এটাই ভালো লাগার বিষয়। সেই রাজনৈতিক দল থেকে যখন কেউ নমিনেশন চাইবেন, তখন তিনি সেই পার্টির লোক এবং তার জন্য কিছু বিষয় আইনের মধ্যে থাকা দরকার। যেমন আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপির ১২ হাজার লোক নমিনেশন পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন, সেখান থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ জন নমিনেশন পাবেন। উক্ত ৩০০ জন্য ছাড়া বাকি আর কেউ নির্বাচন করতে পারবে না। যদি প্রকৃত অর্থে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা কায়েম করতে হয়, তাহলে এমন আইন থাকা জরুরি। তবে এবার বিদ্রোহ শুরু হলে প্রথম দিন থেকেই এর ব্যাপকতা লক্ষ্য করা যেত। এর আগে বিভিন্ন জায়গায় হরতাল, অবরোধ, যেগুলো আমরা লক্ষ্য করি। এবার এরকম হওয়ার সম্ভাবনা কম। নির্বাচনে বেশি লোকের আগ্রহ থাকে তখনই, যখন দেখা যায় খুব সহজে জয় পাওয়া যাবে, পাস করা যাবে। কিন্তু নির্বাচনে যখন ব্যাপক প্রতিদ্বন্দ্বিতার আবহ দেখবে, তখন কাউকে পাওয়া যাবে না। কারণ তখন অনেকের অর্থ ব্যয়ের বিষয়টি সামনে চলে আসবে। কারণ নির্বাচনে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়। যদিও নির্বাচন কমিশনের ২৫ লাখ টাকা খরচের আইন করেছে। কিন্তু বাস্তবে তা হয় না। কয়েকগুণ টাকা লেগে যায়। তখন অনেকে চিন্তা করবেন। বাংলাদেশে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ইতিহাস কী? বাংলাদেশে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় গত ২২ বছরের ইতিহাসে স্বতন্ত্র প্রাথী সংখ্যা- ১০ জন অতিক্রম করার কোনো ঘটনা নেই। যেখানে ভালো নির্বাচন তথা সকল দলের অংশগ্রহণ থাকে তাহলেও ৫ থেকে ৭ জনের বেশি স্বতন্ত্র প্রার্থী পাস করেন না। কাজেই এবার নির্বাচনে বিদ্রোহীদের জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন হওয়া দরকার যে, ব্যাপক অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে পাস করার সম্ভাবনা নেই। এবারের নির্বাচন রাজনৈতিভাবে ব্যাপক উত্থান পতনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। রাজনৈতিক নানা পক্ষ এবং প্রতিপক্ষ পরস্পর মুখোমুখি এবং শক্তিশালী। সেখানে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে পাস করার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমি মনে করি, এদের সংখ্যা এবার ৩ থেকে ৪ জনের বেশি হবে না। সব মিলিয়ে এক শতাংশ। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। কিছু ঘটনা তো ঘটবেই। তারপরও আমি মনে করি, শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলো সবকিছু সমন্বয় করবে এবং করতেই হবে। তবে কিছু কিছু সমস্যা বা ঘটনা হয়তো থেকেই যাবে। নির্বাচনের মাধ্যমে মীমাংসা করতে হবে। যেমন বেশি সমস্যাযুক্ত আসন উন্মুক্ত করে দেয়া যেতে পারে। অর্থাৎ যারা আছেন, সবাই দাঁড়াবে। যে পাস করতে পারে। সমাধান একটি বের হবেই। যারা আগে এমপি ছিলেন, তাদেরকে আবার এমপি রাখার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের একটি মনস্তাত্ত্বিক দিকটি কী? তাদের মনস্তাত্ত্বিক বিষয়কে আমরা এভাবে চিন্তা করতে পারি, এবার উন্নয়নকে ফোকাস করা হবে। অর্থাৎ দেশ এই অবস্থায় ছিল, উক্ত অবস্থা থেকে আমরা এই অবস্থানে নিয়ে এসেছি, আবার ক্ষমতায় গেলে আরো উন্নয়ন করা হবে। এগুলোই প্রধান বিষয়। উন্নয়ন তো হয়েছেই। অনেকটাই দৃশ্যমান। এলাকার রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা, সেনিটেশন, কৃষিসহ নানা উন্নয়ন হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে আরো উন্নয়ন দরকার। তারপরও একেবারে লক্ষ্যণীয় মাত্রায় অগ্রগতি আমাদের হয়েছে। যদি বলা হয়, স্থানীয় সরকারের এই সব কাজ করার কথা ছিল। কিন্তু এমপি ছাড়া স্থানীয় কোন কাজ হয়না। স্থানীয় সরকারের কাছে জনগণ যা চায়, এমপির কাছেও তাই চায়। যেমন এলাকার পাকা রাস্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ইত্যাদি। আমরা তাত্ত্বিকভাবে অনেক কথাই বলি কিন্তু বাস্তবে প্রয়োগ নেই। এমপির কাজ কী? ঢাকায় বসে আইন প্রণয়ন করবেন। কিন্তু সাধারণ ভোটের মাথায় এগুলো নেই। তারা এমপির কাছে চাচ্ছে রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ইত্যাদি। আমাদের এখানে ঐতিহাসিকভাবে এমপিরা বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের সাথে সম্পৃক্ত। বরাদ্দ নিয়ে আসার সাথে জড়িত। গত কয়েক বছর যাবত এলাকার উন্নয়নে কাজে প্রত্যেক এমপি বিশেষ বরাদ্দ পেয়ে আসছেন। সেক্ষত্রে এই বিষয়গুলো আওয়ামী লীগের পুরাতনদের এবার এমপি হিসেবে রাখার ক্ষেত্রে মনস্তাত্ত্বিক হিসেবে বেশি কাজ করেছে। নমিনেশনে বিষয়গুরো প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ যাদের মাধ্যমে উন্নয়ন হয়েছে, তাদেরকে ফের উন্নয়নমূলক কাজ করার সুযোগ করে দেয়া। কাজেই এবার নির্বাচনে আরো বেশি রদবদল না হওয়ার কারণ এটাই। বর্তমানে দেশের সর্বময় কর্তৃত্ব নির্বাচন কমিশনের হাতে চলে গেছে। ইসি যদি তাদের ক্ষমতা ব্যবহার করতে না পারে, তাহলে সেটা তাদের ব্যর্থতা। তবে ইসির শব্দ চয়নের মধ্যে বিরাট সমস্যা হয়েছে। সচিব কেন নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে থাকবেন বলতে গেলেন। বলতে হবে নির্বাচন যখন হয়, তখন পক্ষ এবং প্রতিপক্ষ অনেকেই আছে। কিন্তু পর্যবেক্ষকরা কোনো পক্ষ অবলম্বন করবেন না, কোন ঘটনায় অংশগ্রহণ করবেন না। সেই অর্থে মনে হয় তিনি এ কথা বলছেন। তিনি বলতে চেয়েছেন, আপনাদের কাজ হচ্ছে দেখা এবং রিপোর্ট করা। কিন্তু কোনো পক্ষপাতিত্ব করবেন না। এসব কথা গিয়ে মূর্তি শব্দটি ব্যবহার করেছেন। অন্য শব্দ ব্যবহার করা যেত। ইভিএম সীমিত আকারে ব্যবহার করা হবে এতে কোনো সমস্যা নেই। কারণ ইভিএম নতুন নয়। ইতিপূর্বে স্থানীয় নির্বাচনে ব্যবহার করা হয়েছে।
লেখক: উপাচার্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়