৯ মাস ধরে ঝুলে আছে ‘বাণিজ্য সংগঠন আইন ২০১৮’
সোহেল রহমান : প্রক্রিয়াগত জটিলতার কারণে প্রায় ৯ মাস ধরে ঝুলে আছে ‘বাণিজ্য সংগঠন আইন ২০১৮’। চলতি বছরের মার্চে আইনটির চূড়ান্ত খসড়া প্রণয়ন করে এর ওপর মতামত প্রদানের জন্য বাণিজ্য সংগঠনগুলোর কাছে মতামত চায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু এরপর এ বিষয়ে আর তেমন কোন অগ্রগতি হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, আইনটির ওপর ব্যবসায়ী তথা বাণিজ্য সংগঠনগুলোর মতামত নেয়া হয়েছে। তাদের মতামত সাপেক্ষে কিছু পরিবর্তনও আনা হয়েছে। বর্তমানে আইনটি ভেটিং-এর জন্য মাস দেড়েক আগে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এটি এখনো ফেরত আসেনি।
জানা যায়, দেশে ছোট-বড় মিলিয়ে চার শতাধিক বাণিজ্য সংগঠন রয়েছে। বিদ্যমান বাণিজ্য সংগঠনগুলো বর্তমানে ‘ট্রেড অর্গানাইজেশন অর্ডিন্যান্স ১৯৬১’-এর আওতায় পরিচালিত হয়ে আসছে। এরপর ১৯৮৪ সালে আইনটিতে কিছু সংশোধনী আনা হয়। কিন্তু ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৮২ থেকে ১৯৮৬ সালের মধ্যে জারি হওয়া অধ্যাদেশগুলোকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হয়। ফলে কার্যকারিতা হারায় ‘ট্রেড অর্গানাইজেশন অর্ডিন্যান্স (সংশোধিত) ১৯৮৪’। পরবর্তীতে বাতিল হওয়া এসব অধ্যাদেশের মধ্যে কয়েকটির আবশ্যিকতা ও প্রাসঙ্গিকতা পর্যালোচনার মাধ্যমে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর মতামত নিয়ে বাণিজ্য সংগঠন অধ্যাদেশের প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জন করে নতুন আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
জানা যায়, বর্তমানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বাণিজ্য সংগঠন উইং-এর পরিচালকের তত্ত্বাবধানে দেশে বিদ্যমান বিভিন্ন বাণিজ্য সংগঠন নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এ উইং থেকে বাণিজ্য সংগঠনগুলোকে লাইসেন্স দেয়া, লাইসেন্সপ্রাপ্ত সংগঠনগুলোর সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি অনুযায়ী পরিচালনা নিশ্চিত করা, সংগঠনের ব্যবস্থাপনা যথাযথ না হলে নির্বাহী কমিটি বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগের মতো কার্যক্রম সম্পাদন করা হচ্ছে। এছাড়া যুক্তিসঙ্গত কারণে কোন সংগঠন নির্বাচন অনুষ্ঠানে ব্যর্থ হলে কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধিসহ সংগঠনগুলোর অডিট রিপোর্ট, বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যবিবরণী মন্ত্রণালয়ে পাঠানোসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় থেকে সংগঠনগুলোর নির্বাচন পদ্ধতিসহ যাবতীয় প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয়। নতুন আইন অনুযায়ী, সরকার নিযুক্ত কমপক্ষে একজন যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা মহাপরিচালক হিসেবে বাণিজ্য সংগঠন সম্পর্কিত কাজগুলো সম্পাদন করবেন।
নতুন আইনের চূড়ান্ত খসড়া অনুযায়ী, আইনের কোন বিধান বা আদেশ লঙ্ঘন করলে বা আইনের কোন বিধান বা আদেশ বলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা বা ব্যক্তির দায়িত্ব পালনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠনকে সরকার অনূর্ধ্ব ১ লাখ টাকা এবং ন্যূনতম ১০ হাজার টাকা জরিমানা করতে পারবে এবং এ আইনের অধীনে দেয়া কোন আদেশের বিরুদ্ধে কোন আদালতে মামলা দায়ের করা যাবে না। সম্পাদনা : ইকবাল খান