• প্রচ্ছদ
  • আমার দেশ
  • আমাদের বিশ্ব
  • খেলা
  • ইসলামি চিন্তা
  • অমৃত কথা
  • বিনোদন
  • আজকের পএিকা
    • প্রথম পাতা
    • শেষ পাতা
  • নগর সংস্করণ
  • মিনি কলাম
  • খ্রিস্টীয় দর্পণ
  • প্রবারণা পূর্ণিমা

প্রথম পাতা • মিনি কলাম • লিড ৫

৯২-এর মাজেজা, আগে জানা ছিলো না!

প্রকাশের সময় : December 25, 2018, 12:01 am

আপডেট সময় : December 24, 2018 at 9:14 pm

অসীম সাহা : হাতিরপুল বাজারে অনেক বছর ধরে একজন আমাকে খুব ভালোবেসে ডেকে ডেকে মাছ দেয়। আমি মাছ কিনতে গেলে কোত্থেকে যেন ছুটে এসে বিভিন্ন দোকানে মাছের দরদাম যাচাই করে কম দামে আমাকে মাছ কিনে দেয়। মাঝবয়সী। আমাকে যে নিয়মিত মাছ দেয়, ফারুকÑতার কী রকম যেন আত্মীয় লাগে। নিজেও সে মাছঅলা। নিজের মাছ বিক্রি করে সে বাজারের আশপাশেই থাকে। আমি সাধারণত রাতে মাছ কিনি। তখনো সে থাকে।
অনেক বছর ধরেই তার সঙ্গে সম্পর্ক। নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে একদিন সকালে মাছ কিনতে গেলাম। সেদিন বাজারে খুব বেশি ভীড় ছিলো না। আমি মাছের অপেক্ষায় বাজারের এক কোণে দাঁড়িয়ে আছি। সে অনেকক্ষণ ধরে আমার মুখের দিতে তাকিয়ে রইলো। আমি একটু বিস্মিত হলাম। ব্যাপারটার কী? কোনোদিন তো আমার দিকে এমন করে তাকায় না! আজ তা হলে তাকিয়ে আছে কেন? কোনো বদ মতলব নেই তো?
ভাবামাত্রই সে আমাকে আকস্মিকভাবে একটা প্রশ্ন করে বসলো, “আচ্ছা, আঙ্কেল, আপনার বয়স কতো, বলেন তো?” আমি হঠাৎ একটু বিব্রত হয়ে তার দিকে তাকালাম। তারপর নিজেকে একটু স্থির করে নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করলাম, “তুমি বলো তো?”
সে আমার দিকে খুব সুতীক্ষè দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করে বললো, “কতো, ৯০?”
আমি হতচকিত হয়ে গেলাম। কারণ তখন আমার বয়স ৬৪। আমি ভালো করে তার দিকে ফিরে তাকেই বিব্রত করে দিয়ে বললাম, “ধুর মিয়া, তোমার তো কোনো বোধই নাই। আমার তো এখন ৯২ চলতেছে।”
সে এবার আরো ভালো করে আমার মুখের দিকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে একগাল হেসে বললো, “হ আঙ্কেল, ঠিকই কইছেন। আপনারে দেখলে বোঝা যায়।”
আমি হাসবো না কাঁদবো, কিছুই বুঝতে পারছি না। কষ্ট করে এবার ৯২ বছরের বৃদ্ধের ভঙ্গিতেই একটু বাঁকা হয়ে পা টেনে টেনে কষ্ট করে মাছের বাজারের মধ্যে ঘোরাঘুরি করতে লাগলাম। সেও আমার সঙ্গে সঙ্গে চলতে লাগলো। আমাকে মাছ কিনে দিলো। সকলকে বললো, “বুঝছস, আঙ্কেল বুড়া মানুষ, তার কাছ থিকা কুনো সময় বেশি দাম নিবি না।” সকলেই ঈষৎ মাথা নাড়লো। সেই থেকে প্রায় সব মাছঅলাই আমার কাছে তুলনামূলক কম দামে মাছ বিক্রি করে। অন্যান্য সুযোগ সুবিধাও দেয়। আমার সেই ভাস্তেসম মাছঅলা নিশ্চয়ই সকলকে এই ধারণা দিয়ে বোঝাতে সক্ষম হয়েছে, আমি ৯২ বছরের একজন বৃদ্ধ। বেশিদিন বাঁচবো না। তাই তাঁকে কম দামে খাওয়ালে পুণ্য হবে।
আমি বুঝে গেছি, ৯২ থেকে বয়স আর নামানো যাবে না। বয়স কমালে বুড়ো হিসেবে দামও পাওয়া যাবে না, কম দামে মাছও খাওয়া হবে না। সেই থেকে আজো আমি ৯২-তেই ফিক্স হয়ে আছি। ৯২-এর যে এমন মাজেজা, আগে তা জানা ছিলো না!
লেখক : কবি ও সংযুক্ত সম্পাদক, আমাদের অর্থনীতি

সম্পাদক

নাসিমা খান মন্টি

09617175101, 01708156820

[email protected]

১৩২৭, তেজগাঁও শিল্প এলাকা (তৃতীয় তলা) ঢাকা ১২০৮, বাংলাদেশ। ( প্রগতির মোড় থেকে উত্তর দিকে)