আসিফুজ্জামান পৃথিল : গত দুই মাস ধরেই বড় রকমের অর্থনৈতিক ধস এবং ২০১৯ সালে মন্দার পূর্বাভাস দেওয়া হচ্ছে। এটি অস্বীকারের সুযোগ নেই যে বিশ^ অর্থনীতি ক্রমাগত পড়তির দিকেই যাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে রয়েছে পুঁজিবাজার। গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে সোমবার পর্যন্ত স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পোর এর ৫০০ সূচক ১৯ শতাংশ কমে গেছে! এগুলো সবই বিশ^ অর্থনীতি বিশেষত মার্কিন অর্থনীতির জন্য বড় সংকট তৈরী করেছে। নিউইয়র্ক টাইমস।
তবে অর্থনীতির এই চ্যালেঞ্জগুলো সত্যকারের ঝুঁকি নয়। এর পেছনে দায়ী আসলে দূর্বল নেতৃত্ব। যার ফলশ্রুতিতেই অর্থনীতির এই দৈন্যদশা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের উদ্ভট ও অস্বাভাবিক আচরণ এবং দূর্বল সরকারি প্রশাসন অর্থনীতির দূর্বলতার জন্য দায়ী। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, এজন্য ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে অন্য বড় অর্থনীতিগুলোও। নিজেদের মিত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদারদের প্রতি আস্থার অভাব সাধারণ অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলোকে ভয়াবহ বানিয়ে দিচ্ছে।
বিভিন্ন জরিপসূত্রে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বস্থানীয় কর্পোরেট নির্বাহীরা হতাশায় ভুগছেন। গত সপ্তাহে পুরো সপ্তাহ জুড়েই অর্থমন্ত্রী স্টিফেন ¤œুচিন ব্যাংকের সিইওদের ডেকে তাদের কোম্পানিতে কোন তারর্য সংকট হবে না আশ^াস দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থব্যবস্থার ইতোমধ্যেই যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে এবং দেশটি আর ক্ষতি চায় না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাদের কার্যালয় ওষুধ কোম্পানির সিইওদের ডেকে জেনেছেন আপাতত কোন ওষুধ সংকট নেই।
ফেডারেল রিজার্ভে নিজের নিয়োগকৃত কর্মকর্তাদের টুইটারে আক্রমণের পর আক্রমণ করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত ৩ দিনের মধ্যেই ফেড প্রধান জেরোমি পাওয়েলকে বরখাস্ত করার উপায় জানতে কয়েকদফায় বৈঠক করেছেন ট্রাম্প! এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প নিজেদের কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ধুয়ে দিয়েছেন! তিনি সম্ভবত পৃথিবীর প্রথম প্রেসিডেন্ট যিনি বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতির একমাত্র সমস্যা হলো ফেড। তাদের বাজার নিয়ে কোন অনুভূতি নেই। তারা বাণিজ্য বোঝেই না!’
যদি পরিস্থিতি এরকমই থাকে বা আরো খারাপ হয়, তবে নিশ্চিতভাবেই বলা যায় মার্কিন প্রশাসনে হ-য-ব-র-ল অবস্থা দেখা দেবে। এসব কারণেই সারা বিশে^র নেতৃত্বের মধ্যেই দেখা দিয়েছে সংশয়। বিশ^ নেতৃত্ব ভুগছে আত্ববিশ^াসহীনতায়। এতদিন বলা হতো একজন শক্তিশালী নেতা বিশ^কে একত্রিত করতে পারে। এখন হয়তো বলা হবে একজন অস্থির বিবেচনাহীন নেতা বিশে^র আত্মবিশ^াস কেড়ে নিতে পারে। সম্পাদনা : ইকবাল খান