দশ বছরে মাথাপিছু আয় বেড়েছে ১ হাজার ৪৮ মার্কিন ডলার
আবু বকর : এক এগারোর পর ২০০৮ সালে মহাজোট সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিলো মাত্র ৭০৩ ডলার। ১০ বছর পর মহাজোট সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের শেষ মুহূর্তে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৫১ মার্কিন ডলার। অর্থাৎ ১০ বছরে মাথাপিছু আয় বেড়েছে ১ হাজার ৪৮ মার্কিন ডলার। মূলত সরকারের “কার্যকর পদক্ষেপ এবং দীর্ঘমেয়াদী নীতি প্রণয়নের ফলে গত দশ বছরে বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয়, খাদ্য উৎপাদন, রেমিটেন্স, মুদ্রাস্ফীতি, আমদানি ও রফতানি বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে। ২০০৯ সালের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৮ সালে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ হয়েছে। এ সময় রেমিটেন্স প্রবাহ ৯ হাজার ৬৮৯ দশমিক ২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১৪ হাজার ৯৮১ দশমিক ৬৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৭ হাজার ৪৭০ দশমিক ৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ৩২ দশমিক শূন্য ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে।”
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, “২০০৮ সাল থেকে ২০১৭ সাল পযর্ন্ত গত ১০ বছরে সব সামাজিক সূচক উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় মাথাপিছু আয় বেড়েছে ১৪৯ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। “সামাজিক গতিশীলতা এবং নারীর ক্ষমতায়নে ও মানব উন্নয়ন সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। ২০০৮ সালে দেশে মানুষের গড় আয়ু ছিলো ৬৬ দশমিক ৮ বছর। ২০১৭ সালে এটি বেড়ে হয়েছে ৭২ বছর। দারিদ্র্যতার হার ২০০৯ সালের ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমে ২০১৮ সালে হয়েছে ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ। অতি দারিদ্র্যের হার ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে হয়েছে ১২ দশমিক ৯ শতাংশ।”
এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জামান আমাদের অর্থনীতিকে বলেন, “গত ১০ বছর অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকার যেমন নিজে কাজ করেছে ঠিক তেমনি দেশের মানুষকে অর্থনৈতিক উন্নয়নে এগিয়ে আসার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছে। যার সফলতা এসেছে কৃষি, কৃষি বহির্ভূতক্ষাত, ব্যবসা বাণিজ্য, তথ্য প্রযুক্তি, বৈদেশিক ঋণ সহ সকল ক্ষেত্র। তাঁর মতে “বাংলাদেশের অর্থনীতি গত ১০ বছরে ইতিবাচক অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। দেশ সাফল্যজনকভাবে এমডিজি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এখন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ বিগত ১০ বছরে ৬ শতাংশ জিডিপি অর্জনের মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে এবং সারাদেশে অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে সরকার উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ, গ্যাস ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। স্থানীয় ও বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য দেশে একটি বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তিনি ৮ শতাংশ প্রবৃব্ধি অর্জনের জন্য অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচি বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন।” সম্পাদনা : ইকবাল খান