নিজস্ব প্রতিবেদক : গতিই জীবন, স্থিতিতে মরণ। জার্মানির ফর্মুলা ওয়ান কিংবদন্তি মাইকেল শুমাখারের গতিই ছিল নেশা। সাত-সাতবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন শুমাখার জীবনে কাড়ি কাড়ি অর্থ কামিয়েছেন ‘গতি’ দিয়ে, গতির খেলা খেলে।
২০০৩ সালে ইতালিয়ান গ্র্যা প্রিঁতে সেই সময়ের ফর্মুলা ওয়ানের ইতিহাসে রেকর্ড ২৪৭ দশমিক ৫৮৫ কিলোমিটার (ঘণ্টায়) তোলা গতিটা যে তারই ছিল। অথচ ফ্রান্সের আলপস পর্বতের ঢালে ছেলের সঙ্গে স্কিইং করতে গিয়ে বরফ জমা পাথরের সঙ্গে মাথায় সজোরে ধাক্কা খেয়ে সেই যে থেমে গেলেন, সেখান থেকে আর ফেরা হলো না শুমাখারের প্রিয় রেসিংয়ে। আজ তার নীরবতার পাঁচ বছর পূর্ণ হলো। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বরের পর থেকে বদলে গেছে এই গতি তারকার জীবন। গেল পাঁচ বছর ধরে স্মৃতি ও বাক শক্তি হারিয়ে কোমায় পড়ে আছেন জার্মানির কিংবদন্তি এই রেসিং ড্রাইভার। পাঁচদিন পর (৩ জানুয়ারি) কোমাতেই তার ৫০তম জন্মদিনে পা দিবেন তিনি। ২০১৩ সালে তার ছেলে মিক শুমাখারের বয়স ছিল ১৪ বছর। বর্তমানে তিনি ১৯ বছর বয়সী তরুণ। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে ছেলেও হয়ে উঠছেন রেসিং ড্রাইভার।
অন্যদিকে তার স্ত্রী কোরিনা বেচ পাঁচ বছর ধরে স্বামীর সেবা করে যাচ্ছেন। নিশ্চল এই তারকার প্রতি মুহূর্তের প্রয়োজন মেটাচ্ছেন। অবশ্য সেটা সকলের অন্তরালে। এমনকি মিডিয়াও মাইকেল শুমাখারের সর্বশেষ অবস্থার কোনো খবর জানতে পারছে না। যেটুকু জানা যাচ্ছে তা শুমাখারের কাছের বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের বক্তব্যে। যারা মাঝে মাঝে নিশ্চল-নিশ্চুপ শুমাখারকে দেখতে যান এবং দেখে এসে চোখের জলে স্বর্ণালী সময়ের স্মৃতি রোমন্থণ করে বক্তব্য দেন। যেমনটা বলেছিলেন মার্সিডিজের ডিরেক্টর টোটো উলফ, ‘আমরা সবাই তাকে খুব মিস করছি। একজন উপদেষ্টা ও মেন্টর হিসেবে মাইকেল শুমাখার সর্বদা আমাদের জীবন ও মার্সিডিজে বর্তমান। আমরা প্রতিনিয়ত তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং আমার জন্য তিনি সর্বকালের সেরা ড্রাইভার। ফেরারি ও সেবাস্তিয়ান ভেটেল সর্বদা তাকে মিস করে। যেখানে তিনি ছিলেন দৃষ্টান্তস্বরূপ।
অবশ্য তার পরিবার বলছে যে কখনো কখনো শুমাখার ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছেন। এখনো তিনি সেরে ওঠার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। প্রথমে ফ্রান্সের গ্রেনোবল ও পরে সুইজারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয় তাকে। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে সুইজারল্যান্ডের লেক জেনেভায় অবস্থিত নিজ বাড়িতেই বিশেষ ব্যবস্থায় চলছে তার পরবর্তী চিকিৎসা।
শুমাখারের চিকিৎসা বাবদ প্রতি সপ্তাহে খরচ হচ্ছে ৫৫ হাজার ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫২ লাখ ২৫ হাজার টাকা)। আর এটা খরচ করা হচ্ছে মাইকেল শুমাখার তার ফর্মুলা ওয়ান ক্যারিয়ারে যে ৮৪০ মিলিয়ন ইউরো কামিয়েছেন সেটা থেকে। ফোর্বস