স্পোর্টস ডেস্ক : মেলবোর্নের মাঠে অসম্ভবকে সম্ভব করার চেষ্টায় আছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। আর সেই জন্যে তাদের নির্ভর করতে হচ্ছে টেলএন্ডার প্যাট কামিন্সের ব্যাটে। চতুর্থ দিনে হঠাৎ করেই সবাইকে চমকে দিয়ে ১০৬ রানে ইনিংস ঘোষণা করে। তখনও হাতে ছিল ২ উইকেট। যদিও স্কোরবোর্ডে লিড তখন ৩৯৮ রানের প্রায় ‘অসম্ভব’ দূরত্ব। অসম্ভব বলার কারণ, মেলবোর্নে এত রান তাড়া করে কেউ কখনো জিততে পারেনি। ক্রিকেট গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা হলেও এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার জন্য ড্র-ই জয়ের সমান। কিন্তু সেই কাজটি এখন প্রায় অসাধ্যে পরিণত হলেও স্বপ্ন দেখাচ্ছেন পেসার কামিন্স! ৮ উইকেটে ২৫৮ রান নিয়ে দিন শেষ করেছে অজিরা। অসাধ্য সাধনে অস্ট্রেলিয়ার সামনে চ্যালেঞ্জ ছিল প্রায় ছয় সেশন ব্যাটিংয়ের। দলীয় ৬৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই পথ হারিয়ে টিম পাইনের দল। দুই ওপেনার মার্কাস হ্যারিস, অ্যারন ফিঞ্চ এবং তিনে নামা উসমান খাজা দ্রুত ফিরে গেলে চাপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। এখান থেকে ৫১ রানের জুটিতে বিপর্যয় জোড়াতালি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন শন মার্শ ও ট্র্যাভিস হেড। কিন্তু মিডলঅর্ডারে মার্শ ভাইয়েরা কিংবা অধিনায়ক পেইন বড় ইনিংস খেলতে না পারায় ভারত আজই জয় তুলে নেওয়ার সুবাস পাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত অপেক্ষায় রাখার কাজটি করেছে অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটিংয়ের লোয়ার অর্ডার ও টেলএন্ডাররা। এই টেস্টে ভারতের দুই ইনিংসে এই পেসার অস্ট্রেলিয়ার হয়ে যেমন সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি তেমনি সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক! আট নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১০৩ বলে কামিন্সের অপরাজিত ৬১ রানের ইনিংস ভীষণ মূল্যবান ইনিংসটাই ম্যাচে বাঁচিয়ে রেখেছে অস্ট্রেলিয়াকে। ভালো অলরাউন্ডার হয়ে ওঠার ইঙ্গিত দেওয়া কামিন্সের এই ইনিংসের জন্যই ৮ উইকেটে ২৫৮ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করতে পেরেছে অস্ট্রেলিয়া। হাতে মাত্র ২ উইকেট রেখে জয় থেকে অস্ট্রেলিয়া এখনো ১৪১ রানের দূরত্বে। কাল লোয়ার অর্ডার অলৌকিক কিছু করে না বসলে অস্ট্রেলিয়ার জন্য ম্যাচ বাঁচানো অসম্ভব,কথাটা বলাই যায়। দুই ইনিংস মিলিয়ে এরই মধ্যে ১৫১ বল খেলেছেন কামিন্স। কাল ব্যাটিংয়ে কিছুক্ষণ টিকলে বল খেলায় ছাপিয়ে যাবেন সতীর্থদের সবাইকে।
তার আগে ২০৬ ওভারের মতো ফিল্ডিং করা, ৪৫ ওভার বোলিং করে ৯ উইকেট নেওয়া (এর মধ্যে ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং) আর ফিফটি করে ম্যাচটা পঞ্চম দিনে টেনে নেওয়া কামিন্স ছাড়া এই অস্ট্রেলিয়ার ‘ওয়ান ম্যান আর্মি’ আর কে! চলতি বছর এক টেস্টে ইনিংসে ন্যূনতম ৫ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ফিফটি তুলে নেওয়ার দ্বিতীয় নজির গড়লেন কামিন্স। নবম উইকেটে স্পিনার লায়ন ও কামিন্সের অবিচ্ছিন্ন ৪৩ রানের জুটিতে তা আর হয়নি। কাল এখান থেকেই অলৌকিক কিছু ঘটানোর চ্যালেঞ্জ নিতে হবে কামিন্স-লায়নদের।