উন্নয়নের জোয়ারে নৌকার বিজয়
স্বপ্না চক্রবর্তী : উন্নয়নশীল দেশের যাত্রাপথে উন্নয়নের জোয়ারে ভর করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। দেশের চলমান অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতেই নৌকা মার্কাকে জয়ী করেছেন বলে জানিয়েছেন সাধারণ ভোটাররা।
গতকাল রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। লম্বা লাইন থাকায় কোনো কোনো ভোটকেন্দ্রে ৪টার পরেও ভোট নেওয়া হয়। ফলাফল হিসেবে, সারা দেশে দুই একটি আসন ছাড়া সবকয়টি আসনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ। তবে কিছু কিছু এলাকায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষসহ প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সারাদেশে ১৭ জন নিহত হওয়ার খবর জানা যায়। নিহতদের মধ্যে আওয়ামী লীগের কর্মী ১১ জন, বিএনপির কর্মী ৪ জন, জাতীয় পার্টি (এরশাদ) ১ ও আনসার সদস্য ১ জন রয়েছেন।
এদিকে এদিন দুপুর থেকেই ভোট কারচুপি, অনিয়ম, পোলিং এজেন্টদের মারধর, ভোটারদের কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা ও এক তরফা নির্বাচনের অভিযোগ পাওয়া গেলেও দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামীলীগের বিকল্প নেই বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আবুল বারাকাত বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ণের ধারাবাহিকতার পুরস্কারই হচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনের ফলাফল। আমরা এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক এই চাই।
বিগত মেয়াদকালে পদ্মাসেতু প্রকল্পসহ মেট্রোরেল প্রকল্প, হাতিরঝিল প্রকল্প, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প, সারা দেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির প্রকল্পসহ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য সব ধরণের তৎপরতা চালিয়েছে আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে দেশের পোশাক শিল্পের উন্নয়নে আওয়ামীলীগ সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন তা আর কোনো সরকারের পক্ষে সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এর সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বলেন, একটা সময় ছিলো যখন বাংলাদেশের পোশাক খাতকে বিশ্বে খুবই নগন্য হিসেবে গণ্য করা হতো। কিন্তু আওয়ামীলীগ সরকারের বিভিন্ন ধরণের প্রণোদনায় এই শিল্প আজ বিশ্বের বুকে মাথা স্বকীয়তা অর্জন করেছে। আমাদের দেশের পোশাক শিল্প অন্যান্য দেশের জন্য অনুকরণীয় হয়েছে এখন। তাই এই সরকারের ধারাবাহিকতা অত্যন্ত জরুরী ছিলো।
উৎসবমুখর নির্বাচন হলেও বিএনপিসহ আরও কয়েকটি দল নির্বাচন বয়কট করে। এর মধ্যে ধানের শীষের ২২ প্রার্থীসহ জামায়াতে ইসলামের ৪ স্বতন্ত্র প্রার্থী ছাড়াও রয়েছে বিএনপি ঐক্যফ্রন্টের ১৮জন প্রার্থী, জাতীয় পার্টির ৫জন প্রার্থী ও স্বতন্ত্র ৩ জন প্রার্থী নির্বাচন বয়কট করে।
নির্বাচনের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রধান বিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনও নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বিভিন্ন আসনে কেন্দ্রে কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের সস্ত্রাসীদের পাশাপাশি পুলিশ, র্যাব, বিজিবি একসঙ্গে তা-ব চালিয়েছে। কোনো কোনো স্থানে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা না থাকলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই ভোটারদের বিরুদ্ধে ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য প্ররোচনা দিয়েছে। তবে দু-একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সব কেন্দ্রেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।