বিটিএমএ সভাপতি বললেন, ৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে বস্ত্র খাতে
স্বপ্না চক্রবর্তী : দেশের বস্ত্র খাতে আগামী পাঁচ বছরে ৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের সুযোগ তৈরির লক্ষ্যে চলমান বস্ত্র খাতের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ‘দ্য ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল টেক্সটাইল অ্যান্ড গার্মেন্ট মেশিনারি এক্সিবিশন (ডিটিজি)’ শেষ হচ্ছে আজ। রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় এ প্রদর্শনীর যৌথ আয়োজক টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) এবং হংকংয়ের ইয়র্কারস ট্রেড অ্যান্ড মার্কেটিং সার্ভিসেস কোম্পানি লিমিটেড। গত ৯ জানুয়ারী এর উদ্বোধন করেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন।
গতকাল শুক্রবার প্রদর্শনীর তৃতীয় দিন বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, ক্রমবর্ধমান রফতানির কারণে বস্ত্র ও পোশাক তৈরির যন্ত্রপাতির অন্যতম সম্ভাবনাময় বাজারে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। দেশে সুতা, কাপড় ও পোশাক তৈরিতে প্রতি বছর শতকোটি ডলার বিনিয়োগ হচ্ছে। আগামী পাঁচ বছরে এই খাতে ৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে যথাযথ অবকাঠামো উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। বস্ত্র ও গার্মেন্ট খাতে আমাদের সমৃদ্ধি ও প্রবৃদ্ধিতে ডিটিজির গুরুত্ব অনেক। ডিটিজির মতো প্রদর্শনী বস্ত্র খাতের সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করেন তিনি।
তবে বস্ত্র খাতের উন্নয়নে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা জরুরি বলে মন্তব্য করেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক ও নীতিগত স্থিতিশীলতা আমাদের সব সময়ের প্রত্যাশা। আগামী ১০ বছরে জ্বালানি মূল্য কেমন হতে পারে, সে ধারণাও আমরা পেতে চাই। এছাড়া ব্যাংক ঋণে সুদের হারও সিঙ্গেল ডিজিট হওয়া চাই। পণ্য বহুমুখীকরণ, বিশেষ করে কৃত্রিম সুতা ও কাপড় উৎপাদনে বাংলাদেশের সম্ভাবনা কাজে লাগানোর এখনই সময়।
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ বস্ত্র ও পোশাক যন্ত্রের প্রদর্শনীটি সরজমিন ঘুরে জানা যায়, ডিটিজির ১৬তম সংস্করণ এটি। এ বছর বিশ্বের ৩৭ দেশের ১ হাজার ২শ টেক্সটাইল ও গার্মেন্ট মেশিনারিজ প্রস্তুতকারক কোম্পানি প্রদর্শনীটিতে অংশ নিচ্ছে। এতে মোট ১১টি হলে রয়েছে ১ হাজার ৬৫০টি বুথ। প্রদর্শনীটি প্রতিদিন দুপুর ১২টায় শুরু হয়ে রাত ৮টায় শেষ হওয়া প্রদর্শনীর সমাপনী হবে আজ। মেলায় আগত চায়না সুইং মেশিনারি অ্যাসোসিয়েশনের জেনারেল সেক্রেটারি চেন জি বলেন, চীনের জন্য বস্ত্র ও পোশাক যন্ত্রের অন্যতম বৃহৎ বাজার বাংলাদেশ। প্রতি বছর চীন থেকে ১০০ কোটি ডলারের বেশি সুইং মেশিন বাংলাদেশে রফতানি হয়। এছাড়া অন্যান্য যন্ত্রেরও এদেশে চাহিদা রয়েছে। প্রতি বছর এ চাহিদা বাড়ছে।
বিটিএমএর তথ্যমতে, বর্তমানে টেক্সটাইল খাতে ৭০ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ রয়েছে, যা বাংলাদেশে বেসরকারি পর্যায়ে একক খাতে সর্বোচ্চ। এক দশকের বেশি সময় ধরে প্রাইমারি টেক্সটাইল খাতের স্পিনিং উপখাত নিট আরএমজির প্রয়োজনীয় সুতার ৮০-৮৫ শতাংশ ও ওভেন উপখাত ওভেন আরএমজির প্রয়োজনীয় ফ্যাব্রিকসের ৩৫-৪০ শতাংশ সরবরাহ করে আসছে।