রাজস্ব আদায়ে এনবিআরকে কড়া নজরদারি ও বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে : ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ
আমিরুল ইসলাম : ভ্যাট সংগ্রহের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এনবিআরকে কড়া নজরদারি এবং বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে বলে মনে করেন এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, সাধারণত নির্বাচনের বছরে রাজস্ব আদায় বাড়ে। কারণ যারা করখেলাপি থাকে, তারা নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য প্রচুর কর দেয়। তারপর নির্বাচনের সময় যে উৎসবমুখর পরিবেশের তৈরি হয়, সেখানেও অনেক ভ্যাট আদায়ের মতো কার্যক্রম হয়ে থাকে। সম্পদ বিবরণীসহ আগে যেসব কর্মকা- ছিলো সম্ভবত সেগুলো এবার হয়নি। না হওয়াতে ভালো করে কর আদায় সম্ভব হয়নি। নির্বাচন উৎসবমুখর বা অংশগ্রহণমূলক যেটাকে বলে, সব পার্টি যদি একসাথে বিস্কুট, চা, চিনি, সিগারেট একসাথে মিছিল-মিটিং করতে পারতো তাহলে রাজস্ব আদায় বাড়তো। পর্যাপ্ত রাজস্ব আদায় না হওয়ার এটি একটি প্রধান কারণ। তবে কমটা বড় অস্বাভাবিক কম। কারণ বছরে বছরে যে গ্রোথ হয়, সে গ্রোথটা এবার নেই। সে গ্রোথটা ধরে রাখা উচিত ছিলো বা দরকার ছিলো। ফলে পরের ছয় মাসে চাপ পড়বে। চাপ পড়লেও আপাতদৃষ্টিতে এমন কোনো জাদুর কাটি দেখা যাচ্ছে না, এটা কাটিয়ে উঠতে পারার মতো। তার পরও এনবিআর চেষ্টা করতে পারে প্রথমত, যে মামলাগুলো চলমান রয়েছে এগুলো নিষ্পত্তির জন্য একটা ক্র্যাশ প্রোগ্রাম হাতে নিতে পারে যেখান কিছু অর্থ আসবে। দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন সেক্টর কর্পোরেশন যাদের কাছে বকেয়া আছে, সে বকেয়াগুলো আদায়ের একটা বিশেষ ব্যবস্থা নিতে পারে। তৃতীয়ত যারা উৎস কর কাটছে, এগুলোতে কড়া দেখভাল করা। যেমন মেশিন আছে যাদের। ভ্যাট আইন পরিবর্তন করা মানে, এই না যে ভ্যাট নেয়া বন্ধ আছে। মানুষ ঠিকই ভ্যাট দিচ্ছে কিন্তু তা সংগ্রহ হচ্ছে না। এখনো আইন প্রবর্তন হয়নি, একথা বলে বসে থাকলে হবে না। একইসাথে ভ্যাট আইনটা যাতে জুলাই মাসে প্রবর্তন হয়। কোনো দিকে না তাকিয়ে সেটা প্রবর্তনের দিকে যাওয়া উচিত। একটি তেজি ভাব প্রকাশ করতে পারলে কিছুটা হয়তো কাভারআপ হবে। তার পরও পুরোটা হবে না। এনবিআরের হাতের কাছে বিদ্যমান সুযোগ যা আছে সেটা নিয়ে উঠেপড়ে লাগতে হবে। ধারাবাহিকভাবে চললে হবে না। তারা অবশ্য বলছে, অনেকগুলো কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, কী নিয়েছে সেটা কাজেই দেখা যাবে। যেখানে বড় বড় কর ফাঁকির বিষয়গুলো আছে সেখানে কঠোর হতে হবে এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। নির্বাচনের বছর রাজস্ব আদায়ের হার পরিমাণ বেশি হওয়ার কথা ছিলো। অতীতের সব নির্বাচনের ছয় মাসের রেকর্ড দেখলে দেখা যাবে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বেশি ছিলো। এবার ভালোভাবে রাজস্ব আদায় বাস্তবায়ন হয়নি। তাই এতো খারাপ অবস্থা বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ।-