‘রহস্যময়’ আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেলেন মোদী! কে দিলেন, কেন দিলেন? উত্তর নেই
ফাতেমা আহমেদ : প্রথম বার একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়ে নিজেই ফলাও করে প্রচার করছেন নরেন্দ্রমোদি! মন্ত্রীরাও একে একে জয়ধ্বনি করছেন। কিন্তু সেই পুরস্কারটি কারা দিলেন? কেনো দিলেন? কীভাবে দিলেন? আর কেনই বা প্রধানমন্ত্রী তা পেলেন এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজছে রাজধানীবাসী। আমেরিকার প্রবীণ মার্কেটিং ও ম্যানেজমেন্ট গুরু ফিলিপ কোটলার-এর নামাঙ্কিত পুরস্কার গত কাল নরেন্দ্রমোদীর হাতে তুলে দেয়া হয়। পিএমও ফলাও করে বলেন, পিপ্ল-প্রফিট-প্ল্যানেট তিন ‘পি’-র ভিত্তিতে এই পুরস্কার। ফি-বছর পাবেন কোনও রাষ্ট্রনায়ক।
প্রথম টুইট-খোঁচাটি এলো রাহুল গাঁন্ধীর কাছ থেকে, ‘বিশ্বখ্যাত পুরস্কার জেতার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাতে চাই। বস্তুত, এটি এতই বিখ্যাত যে এর কোনও জুরি সদস্য নেই। আগে কাউকে দেয়া হয়নি। এবং আলিগড়ের এক অজানা সংস্থার দৌলতে এই পুরস্কার দেয়া হয়েছে।’ রাহুলের কটাক্ষ, এই বেনামী সংস্থার সহযোগীও বিজেপি-ঘনিষ্ঠ দু’টি সংস্থা। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, আলিগড়ের সংস্থাটির ঠিকানা ও ফোন নম্বর দুই-ই ভুয়া।
রাহুল টুইট করার আগেই কংগ্রেস হোমওয়ার্ক সেরে নিয়েছিলো। দলের নেতা গৌরব বল্লভ বলেন, ‘আমি ম্যানেজমেন্টের ছাত্র। কোটলারের নামে পুরস্কারের কথা শুনিনি। পুরস্কার দিতে তিনি নিজেও আসেননি।’ কংগ্রেসের অভিযোগ, পুরস্কারদাতারা বলেছেন গোটা প্রক্রিয়াটি নাকি ‘গোপন’। তাই কিসের ভিত্তিতে এই পুরস্কার, সেটি তারা বলবেন না।
পুরস্কার নিয়ে মোদীকে বিপাকে পড়তে দেখে রাহুলের টুইটের জবাব দেন স্মৃতি ইরানি। লেখেন, ‘কী দারুণ বলেছেন! এমন এক ব্যক্তির থেকে এই মন্তব্য আসছে, যার পরিবার নিজেদের মধ্যেই ‘ভারতরতœ’ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ মহিলা কংগ্রেসের প্রধান সুস্মিতা দেব স্মৃতিকে জবাব দিলেন, ‘নিম্ন রুচির পরিচয়। এমন ব্যক্তির থেকে এমন মন্তব্য আসছে, যিনি নিজেকেই ডিগ্রি দিয়েছেন, যা তিনি অর্জনও করেননি!’
ফিলিপ কোটলা নামে বেশ ক’টি অ্যাকাউন্ট আছে টুইটারে। দিনভর খোঁচাখুচি চলার পরে ‘ভেরিফায়েড’ নয় এমন একটি অ্যাকাউন্ট থেকে এলো কোটলারের কয়েকটি টুইট। একটিতে লেখা, ‘আসামান্য নেতৃত্ব, অফুরন্ত শক্তি ও নিঃস্বার্থ সেবার জন্য নরেন্দ্র মোদীকে বেছে নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন।’ অন্য টুইটের বক্তব্য, ‘মোদীর প্রয়াসে ভারতে আর্থ-সামাজিক ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি হয়েছে। তিনি প্রথম প্রাপক হওয়ায় ভবিষ্যৎ প্রাপকদের জন্য মাপকাঠিটা উঁচু হলো।’