প্রধানমন্ত্রী বললেন, আগামী ৫ বছরে প্রবৃদ্ধি ১০ ভাগে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে
শোভন দত্ত : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘একটি ক্ষুধা এবং দারিদ্র্য মুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলায় সুশাসন এবং দুর্নীতি মুক্ত প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করা জরুরি।’ সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যেটা প্রয়োজন সেটাতো আমরা মিটাচ্ছি তাহলে দুর্নীতি কেন হবে। মন মানসিকতাটা পরিবর্তন করতে হবে এবং সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আপনাদের দিতে হবে একদম তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত। প্রধানমন্ত্রী গতকাল সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ নির্দেশনা দেন। সূত্র : বাসস
টানা তৃতীয় বার সরকার গঠনের পর ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় পরিদর্শন কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্বে থাকা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পরিদর্শনে আসেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, একেবারে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট একটি নির্দেশনা দিতে হবে- কেউ দুর্নীতি করলে সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ যে হারে বেতন আমরা বাড়িয়েছি। এ উদাহরণ মনে হয় পৃথিবীর কোনও দেশেই নেই। সন্ত্রাস-মাদক-দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যহত থাকবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে, দুর্নীতির বিরুদ্ধেও আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, লক্ষ্য বাস্তবায়নে সরকার সন্ত্রাস, মাদক এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে।
’৭১-এর পরাজিত শক্তি সেই পাকিস্তানও এখন আর্থসামাজিক সূচকসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সূচকে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশকে অনুকরণ করতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখন সেই পাকিস্তানও বলে আমাদেরকে বাংলাদেশ বানিয়ে দাও। আজকে কিন্তু আমাদের আর তলাবিহীন ঝুড়ি বলার সাহস তাদের নেই। একথা বলতেও তারা পারবে না। কারণ আমরা অনেক এগিয়েছি। এই এগিয়ে যাওয়াটা, এই যাত্রাটা আমাদের কিন্তু অব্যাহত রাখতে হবে।’
স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিতে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সর্বক্ষেত্রে এই ডিজিটাল সুবিধা ব্যবহার করতে হবে। এর মাধ্যমে আমি মনে করি স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত হতে পারে।’ একটা সময় বাংলাদেশে দরপত্র বাক্স ছিনতাই হত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে কারণে আমরা ই-টেন্ডারে চলে গেলাম। এখন আর টেন্ডার বাক্স ছিনতাইয়ের ঘটনা শোনা যায় না।’
সকাল ১০টায় দলের প্রয়াত সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের স্মৃতি বিজড়িত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আসেন শেখ হাসিনা।
গত অর্থবছরে জাতীয় প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৮৬ ভাগে উন্নীত হয়েছে এবং আগামী ৫ বছরে এই প্রবৃদ্ধি তাঁর সরকার ১০ ভাগে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষের কাছে অর্থনৈতিক সুফলটা পৌঁছে দেওয়া এবং সেজন্য আমরা তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত বাস্তবমুখী অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি সেটা যদি আমরা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে সেই লক্ষ্য আমরা অবশ্যই অর্জন করতে পারবো।
তাঁর সরকার মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৪ ভাগে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উচ্চপ্রবৃদ্ধি অর্জন এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হলেই জনগণ অর্থনীতির সুফলটা ভোগ করে।
অন্যান্যের মধ্যে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কর্মকান্ড তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহমদ। সম্পাদনা : ইকবাল খান
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মোঃ আবুল কালাম আজাদ, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।