বিএনপি পুনর্গঠনের দাবিতে সোচ্চার নেতাকর্মীরা তরুণদের মূল দায়িত্ব দিয়ে প্রবীণরা সরে যাবেন
শাহানুজ্জামান টিটু : বিএনপিকে পুর্নগঠন করার দাবি উঠেছে দলের ভেতর থেকেই। স্থায়ী কমিটির ৫টি পদ শূন্য, চলতি বছরের ১৯ মার্চ শেষ হবে বর্তমান কমিটির মেয়াদ। এই অবস্থায় নতুন করে দল সাজানোর দাবি তুলেছেন নেতাকর্মীরা; তারা চান, নেতৃত্বে তরুণদের অগ্রধিকার দেয়া হোক। বিএনপি’র নীতিনির্ধারকরাও এটা মেনে নিয়ে বলেছেন, দলকে নতুন করে সাজানো এখন সময়ের দাবি। বিএনপিকে যদি ঘুরে দাঁড়াতে হয়, তাহলে তরুণদেরকে সামনে এনে তাদের কাছেই দলের নেতৃত্ব দিতে হবে। দলের একাধিক নীতিনির্ধারক জানান, পুনর্গঠন দাবির প্রতি বিএনপির হাইকমান্ড শ্রদ্ধাশীল। তবে কোন প্রক্রিয়ায় তা হবে, তা নিয়ে ভাবতে হবে। বর্তমান কমিটির শূন্যপদ পূরণ করা হবে, নাকি নতুন ভাবে কমিটি হবে, এ বিষয়ে জানতে চলতি সপ্তাহে কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে চান দলের নীতিনির্ধারকরা। দল গোছানোর বিষয়ে তার মতামত জানার পর এ বিষয়ে লন্ডনে অবস্থানরত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনা করেই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন নেতারা।
দলের একাধিক নেতা মনে করেন, দলের তরুণ নেতা, যারা অপরাধমূলক কর্মকা-ে সম্পৃক্ত নন; এমন নেতাদের সামনের সারিতে আনা হলে দলের সাংগঠনিক গতিশীলতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। তাদের মতে, রাজনৈতিক কারণে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সব সরকারের সময়েই মামলা হয়েছে। এসব মামলার ভবিষ্যত নিয়েও প্রশ্ন থাকে। তাই এ নিয়ে না ভেবে তরুণদেরকে নেতৃত্বে আনতে হবে।
উল্লেখ্য, গেলো নির্বাচনে পরাজয়ের পর দলের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। নেতৃত্বে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে কেউ কেউ মহাসচিবসহ দলের দায়িত্বশীল নেতাদের সরে যাওয়ার দাবি তোলেন।
পুনর্গঠনের দাবি যখন ভেতরে ভেতরে জোরালো হচ্ছে ঠিক সেই সময় সত্যটা মেনে নিয়ে দলপুর্নগঠন ও পদ থেকে সরে যাওয়ার কথাও বলেছেন কয়েকজন নেতা। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি অনুধাবন করে বলেন, দলকে গতিশীল করার বিকল্প নেই। এই জন্য তরুণ নেতাদের অগ্রাধিকার দিয়ে দলকে আরো বেশী সংগঠিত করা হবে।
আর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে আনতে হবে। আমরা যারা ব্যর্থ বলে পরিচিত হয়েছি আমাদেরও পদ ছেড়ে দিতে হবে তরুণদের জন্য। তাহলেই বিএনপি ঘুরে দাঁড়াবে। কাউন্সিলের মাধ্যমে দলকে পুনর্গঠন করতে হবে। দলের পরীক্ষিতদের সামনে আনতে হবে।
এ প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, দরকার হলে আমাদের যাদের বয়স হয়ে গেছে আমরা সরে যাব। তারপরেও এই দলটাকে তো রাখতে হবে। বিএনপিকে বাঁচানোর একমাত্র উপায় হলো নতুন করে পুনর্গঠন করা। এই কাজ আমাদের কয়েক মাসের মধ্যেই করতে হবে। তাহলেই আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবো। সম্পাদনা : সালেহ্ বিপ্লব